ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিশু অপহরণ-হত্যায় চাঁদপুরে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
শিশু অপহরণ-হত্যায় চাঁদপুরে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

চাঁদপুর: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নে অপহরণের পর মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা না পেয়ে গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে শিশু নাবিল রহমান ইমন (৬) হত্যার ঘটনায় মামলার আসামি মো. শাহজালাল হোসেন সোহাগ (২৬) কে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে মামলার রায় দেন চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী।

আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭ ও ৮ ধারায় পৃথকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রত্যেক ধারায় পৃথকভাবে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া দণ্ডবিধি ২০১ ধারায় তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড, দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

নাবিল ওই ইউনিয়নে মদনেরগাঁও গ্রামের মুন্সী বাড়ীর মো. মিজানুর রহমানের ছেলে এবং স্থানীয় চান্দ্রা বাজার শিশু-কিশোর একাডেমির প্লে গ্রুপের ছাত্র ছিল।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. শাহাজালাল হোসেন সোহাগ একই ইউনিয়নের খাড়খাদিয়া গ্রামের মো. শাহজাহান মেকারের ছেলে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর শিশু নাবিল দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ীতে ফেরার পথে আসামি সোহাগ অপহরণ করে চান্দ্রা বাজারে তার দোকানে নিয়ে যায়। দোকানে একটি কক্ষে শিশুকে আটকে রাখে এবং মোবাইল ফোনে শিশুর মার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ওইদিনই তাকে গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে শিশুটিকে কাগজের কার্টুনে ডুকিয়ে বাজারের গলির ময়লার ডাস্টবিলে লুকিয়ে রাখে। শিশুকে খুঁজে না পেয়ে ওই দিনই শিশুর পিতা মিজানুর রহমান ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর ২ অক্টোবর বাজারের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ডাস্টবিনে শিশু নাবিলের মরদেহ কার্টুন থেকে উদ্ধার করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। তারপর মুক্তিপণের টাকা দাবি করা মোবাইল ফোন নাম্বারের সূত্রধরে সোহাগকে ১৩ অক্টোবর গ্রেফতার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। তারপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধার করে।

ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আখতার হোসেন ঘটনাটি তদন্ত করে ওই বছর ২ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইয়েদুল ইসলাম বাবু বাংলানিউজকে বলেন, মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর চলাকালীন ৯ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করে। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে এ রায় দেওয়া হয়। তবে আসামি জামিনের পর পলাতক রয়েছে। তার অনপুস্থিতিতে এই রায় দেন বিচারক।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।