ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আপাতত ওয়াসার পানির মূল্যবৃদ্ধি নয়: চেম্বার কোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২৩
আপাতত ওয়াসার পানির মূল্যবৃদ্ধি নয়: চেম্বার কোর্ট

ঢাকা: বিধি প্রণয়ন না করে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম নির্ধারণকেও বে-আইনি ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। তবে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পানির দাম বাড়ানো যাবে না।

তবে ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘পারফরম্যান্স বোনাস’ (উৎসাহ বোনাস) হিসেবে প্রণোদনা দেওয়া অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করা হয়নি।

এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ওয়াসার পক্ষে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (২৯ মার্চ) আপিল বিভাগের চেম্বার জজ এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম। ওয়াসার পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

পরে ক্যাবের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঢাকা ওয়াসার পানির মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত। তবে আপিল বিভাগে আপিল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পানির মূল্যবৃদ্ধির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। পারফর্মেন্স বোনাসের ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল থাকছে।

বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৩১ জুলাই কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

রুলের শুনানি শেষে গত ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।

রায়ে বিধি প্রণয়ন না করে পানির দাম নির্ধারণকেও বে-আইনি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পানির দাম বাড়িয়ে কার্যকর এবং উৎসাহ ভাতাও কার্যকর করে ফেলায় সেগুলো মার্জনা করা হয়। ভবিষ্যতে বিধি প্রণয়ন না করা পর্যন্ত পানির দাম নির্ধারণ বা উৎসাহ ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

হাইকোর্টে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। আর ঢাকা ওয়াসার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাসুম ও সাঈদ মাহসিব হোসেন।

রায়ের দিন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঢাকা ওয়াসা আইন ১৯৯৬-এ সুস্পষ্টভাবে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পানির মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা থাকলেও কোনো বিধি প্রণয়ন ছাড়াই খেয়াল খুশি মতো পানির মূল্যবৃদ্ধি এবং অবৈধভাবে ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করে ক্যাব। উভয়পক্ষে দীর্ঘদিন শুনানি হওয়ার পর যেকোনো সময় রায় ঘোষণার কথা ছিল।

১৬ মার্চ উচ্চ আদালতের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বিধি বহির্ভূতভাবে পানির মূল্য নির্ধারণ ও পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেন। যেহেতু অন্যায় কাজগুলো পূর্বেই সমাপ্ত হয়েছে তাই সেসব বাতিল না করে আদালত ক্ষমা করে দেন। কিন্তু ভবিষ্যতে বিধি ছাড়া যেন পানির মূল্য নির্ধারণ করা না হয় এবং পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়া না হয় সে মর্মে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বিধি প্রণয়ন না হওয়ায় পর্যন্ত জুডিশিয়াল গাইডলাইন করে দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে যে আবেদন ছিল তা আপাতত মঞ্জুর করা থেকে বিরত থেকেছেন এবং প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে সরকার অনতিবিলম্বে বিধি প্রণয়ন করে বিদ্যমান অসুবিধা দূর করবে।

এরপর রায় স্থগিত চেয়ে ওয়াসা আপিল বিভাগে আবেদন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।