ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

অবৈধ সম্পদের মামলায় জামিন চেয়েছেন ডিআইজি মিজান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
অবৈধ সম্পদের মামলায় জামিন চেয়েছেন ডিআইজি মিজান

ঢাকা: সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন।

সোমবার (১০ এপ্রিল) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় আবেদনটি ১৯১ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।

জামিন আবেদনের পক্ষে রয়েছেন আইনজীবী মাহবুব শফিক। দুদকের পক্ষে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, গত বছরের ২৫ জুলাই হাইকোর্ট তাকে জামিন না দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে থাকা মামলাটি ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এরমধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় মিজানুর রহমান হাইকোর্টে জামিন চেয়েছেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা
২০১৯ সালের ২৪ জুন দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির পরিচালক মনজুর মোর্শেদ বাদী হয়ে মামলাটি সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন—ডিআইজি মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসান ও ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৩ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।

২০১৮ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকাকে জোর করে বিয়ে করার সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। ওই ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরসহ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে বিতর্কিত ডিআইজি মিজানকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। পরে একই বছরের ২৫ জুন তাকে বরখাস্তের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিকে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিপুল অংকের অবৈধ সম্পদের খোঁজ পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অনুসন্ধান শেষে তার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।

ঘুষ লেনদেনের মামলা
২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজান নিজেও এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।

এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি গত বছর ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলাভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।

২০১৯ সালের ১৬ জুলাই ৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলার বিচার শেষে এনামুল বাছিরের ৮ বছর এবং মিজানুর রহমানের ৩ বছর কারাদণ্ড হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।