ঢাকা: ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনি ও তার স্ত্রী নিগার আফতাবকে হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে টাঙ্গাইল আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী।
গত ১৮ এপ্রিল বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের আগাম জামিন দিয়েছিলেন।
ওইদিন বড় মনির আইনজীবী মো. এহসান হাবিব জানিয়েছিলেন, গোলাম কিবরিয়া মনি ও তার স্ত্রী নিগার আফতাবকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই তাদের টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বড় মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের ভাই ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব।
গত ৫ এপ্রিল রাতে এক কিশোরী বাদী হয়ে গোলাম কিবরিয়া বড় মনির নামে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী (১৭) এখন অন্তঃসত্ত্বা। মামলায় গোলাম কিবরিয়া বড় মনির পাশাপাশি তার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, কিশোরীর ভাইয়ের সঙ্গে জমি নিয়ে সমস্যা হয়। এ কথা বড় মনিরকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। বড় মনির পরে গত ১৭ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশে একটি ১০তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্লাটে যেতে বলেন। সেখানে হেলে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে কিশোরীকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বড় মনির কক্ষে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং সে ছবি তুলে রাখেন। ধর্ষণ শেষে কাউকে এ কথা জানাতে নিষেধ করেন এবং কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। তারপর ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই মেয়েটিকে ধর্ষণ করতেন বড় মনির।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এ ধর্ষণের কারণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ কথা জানালে বড় মনির তাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনির মেয়েটিকে আদালত পাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তাতে রাজি না হওয়ায় ওই বাসার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় মেয়েটিকে। পরে তাকে সেখানে আবার ধর্ষণ করেন বড় মনির। ধর্ষণের পর বড় মনিরের স্ত্রী তাকে মারপিট করলে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে রাত ৩টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয় তাকে। তারপর থেকে মেয়েটিকে নানা হুমকি দেওয়া হতো। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন বাদী।
আরও পড়ুন >> ধর্ষণ মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেলেন বড় মনি ও তার স্ত্রী
বড় ভাইয়ের নামে ধর্ষণ মামলা নিয়ে এমপির সংবাদ সম্মেলন
টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতার ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
এক ধর্ষণ মামলা পাল্টে দিল টাঙ্গাইলের রাজনীতির মাঠ!
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৩
ইএস/এসএএইচ