ঢাকা: ‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন?’ এমন বক্তব্য দেওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে ৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ দিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী শায়েখে চরমোনাই সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
সাত দিন সময় দিয়ে নোটিশে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল বাসেত।
১২ জুন নির্বাচনের দিন বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকায় হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ফয়জুল করীমের বরাত দিয়ে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতউল্লাহ জানান, ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজের চৌমাথার কাছে ৩০ থেকে ৪০ জন নৌকা সমর্থক তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
ওইদিন বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিইসি।
একটি দলের মেয়র প্রার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে, তাহলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ বলা যায় কী? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, রক্তাক্ত, এখন সব কিছু তো আপেক্ষিক। উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা কিন্তু রক্তক্ষরণ দেখিনি। যতটা শুনেছি ওনাকে পেছন থেকে কেউ ঘুষি মেরেছে।
ঘটনার বিবরণী তুলে ধরে নোটিশে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ইলেকট্রনিক এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনকালীন প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীনে। অথচ নোটিশ গ্রহীতা (সিইসি) ঘটনার বিষয়ে কোনোরূপ ব্যবস্থা অদ্যাবধি গ্রহণ করেননি। এ ব্যর্থতার জন্য আপনি (সিইসি) দায়ী। সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।
এছাড়া নির্বাচনের দিন বিকেলে সিইসির দেওয়া বক্তব্য উল্লেখ করে নোটিশে আরও বলা হয়, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বাংলাদেশের কেবল ঐতিহ্যবাহী সৈয়দ পরিবারের সন্তানই নন; তিনি একজন ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির হিসেবে তার দেশ ও বিদেশে লাখ লাখ ভক্ত ও অনুসারী রয়েছে। ভোট কারচুপিতে বাধা দেওয়ার কারণে তার ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আপনার (সিইসি) বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন, অযাচিত, কুরুচিপূর্ণ, অমানবিক, বেআইনি ও অনৈতিক। যার ফলে মুফতি ফয়জুল করীমের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে । এর জন্য আপনি (সিইসি) দায়ী। তার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ পাঁচশ’ কোটি টাকা।
এ কারণে সিইসিকে সাত দিনের মধ্যে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে নোটিশে বলা হয়, এছাড়া ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচশ’ কোটি টাকা প্রদান করে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার’ পদ থেকেও পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে উপযুক্ত আদালতে প্রয়োজনীয় সব আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
ইএস/জেডএ