লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় স্ত্রী ছালেহা বেগমকে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী মফিজ উদ্দিন মইজকে (৩৩) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত মফিজ রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মনু মিয়া চৌকিদারের ছেলে। ভিকটিম ছালেহা একই এলাকার জিন্নাহ মোল্লার মেয়ে।
আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, মফিজ জুয়া খেলায় আসক্ত ছিলেন। এ নিয়ে প্রায়ই বাড়িতে এসে স্ত্রী ছালেহার সঙ্গে ঝগড়া এবং মারধর করতেন। শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকাও দাবি করতেন তিনি। নির্যাতন করায় মেয়ের সুখের জন্য জিন্নাহ তার ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু মফিজকে দেন। কিন্তু এরপরও ছালেহাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন মফিজ।
২০২০ সালের ৪ মে দুপুরে ছালেহা আত্মহত্যা করেছে বলে তার বাবা-মাকে খবর দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এর আগের রাতে ছালেহাকে মারধর করা হয় বলে এলাকার লোকজন তার বাবা-মাকে জানিয়েছে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ছালেহাকে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসে।
পরে একই বছর ১ জুন ছালেহার বাবা জিন্নাহ মোল্লা বাদী হয়ে মফিজসহ ৮ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
২০২১ সালের ৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই নোয়াখালী জেলার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল আদালতে মফিজের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তদন্তকালে অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এতে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৩
আরএ