ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্সা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদসহ ৯ জনের বিচার শুরু হয়েছে। রোববার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরী অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে সভাপতি) নাইমুল হাসান, একই থানার থানার তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর আমজাদ হোসেন, ফিরোজ মাহমুদ, মো. সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খান কাজল, সিয়াম, অলি আহমেদ ওরফে জনি।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর এই ৯ জনকে অভিযুক্ত করে এই মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ। সম্পূরক অভিযোগপত্রে ইশতিয়াক মাহমুদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মুজাহিদ আজমি তান্না মারা যাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়ায় আসামির সংখ্যা ৯ জনই থাকে।
এছাড়া নাম-ঠিকানা জানতে না পারায় আরও ১৫-২০ আসামির নাম অভিযোগপত্রে আসেনি। এতে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়।
এরপর গত ৪ অক্টোবর ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ওইদিনই তিনি গ্রেপ্তার হলে পরদিন আদালত তাকে জামিন দেন। পরে গত ৩১ অক্টোবর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকী আল ফারাবী মামলাটি বদলির আদেশ দিয়ে নথি সিএমএম বরাবর প্রেরণ করেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. আবদুর রউফ এই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সেই অভিযোগপত্রে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের বাসায় নৈশভোজের অংশ নিতে যান। যেখানে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমও অংশ নেন। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। নৈশভোজ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তারা মার্সা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে বার্নিকাট দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
সেই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে ৯ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর পর রাষ্ট্রপক্ষে ৫ জন সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষীতে ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির জড়িত থাকার কথা উঠে আসে। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর ১ জানুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমান ছিদ্দিকী অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।
২০১৮ সালের ১০ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই রাতে ৩০-৪০ জন দুর্বৃত্ত বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা করে। তারা বার্নিকাটের ড্রাইভার ও বদিউলের ছেলের ওপর আক্রমণ করে। বার্নিকাটের গাড়িতে পেছনে পেছনে ধাওয়া করে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পিস্তল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে আগুন দেওয়ার উস্কানি দেয় দুর্বৃত্তরা।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
কেআই/এমএম