ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শতবর্ষী নার্সিং পুকুর ভরাট কার্যক্রমের ওপর উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
শতবর্ষী নার্সিং পুকুর ভরাট কার্যক্রমের ওপর উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা

বরিশাল: বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নার্সিং পুকুর ভরাট কার্যক্রমের ওপর উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা একটি জনস্বার্থমূলক মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

 

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।  

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, হাইকোর্ট বিভাগ বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বগুড়া আলেকান্দা মৌজায় অবস্থিত নার্সিং পুকুর ভরাট কার্যক্রম থেকে বরিশাল জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক, বরিশালের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট), বরিশাল এর অধ্যক্ষকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।  

নিষেধাজ্ঞার এ আদেশের পাশাপাশি আদালত পুকুরটি বরিশাল জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক, বরিশারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট), বরিশাল এর অধ্যক্ষ কর্তৃক ভরাট কার্যক্রম থেকে রক্ষায়, পুনরুদ্ধারে ও সংরক্ষণে বিবাদীদের ব্যর্থতা সংবিধান ও প্রচলিত আইনের পরিপন্থি হওয়ায় তা কেন অবৈধ, আইনি কর্তৃত্ববিহীন এবং জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

একইসঙ্গে বরিশাল জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী পরিচালক, বরিশালের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট), বরিশাল এর অধ্যক্ষ কর্তৃক অননুমোদিত ভরাট কার্যক্রম থেকে পুকুরটি রক্ষায়, ভরাটকৃত অংশকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এবং পুকুরটিকে জনসাধারণের জন্য সংরক্ষণে উল্লেখিত বিবাদদের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

বেলা’র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আশরাফ আলী, বার-এট-ল এবং তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ সরকার।  

মামলার বিবাদীরা হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বরিশালের জেলা প্রশাসক, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, বরিশাল বিভাগের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক, বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার, বরিশাল জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী পরিচালক, বরিশালের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বরিশালের জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট), বরিশালের অধ্যক্ষ।  

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন বগুড়া আলেকান্দা মৌজায় এস এ ২৪৫৪ নং দাগে ৩২ দশমিক ২ শতাংশ আয়তনবিশিষ্ট একটি পুকুর রয়েছে যা ‘নার্সিং কোয়াটার’ পুকুর নামে পরিচিত। শতাধিক বছরের পুরাতন এ পুকুর গার্হস্থ্য কাজের জন্য সাধারণের ব্যবহার্য হিসেবে রেকর্ড। নগরীর পরিবেশ রক্ষায় ও জলাবদ্ধতা নিরসনে পুকুরটির ভূমিকা অপরিসীম। অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় এ পুকুরের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা।

সম্প্রতি রাতে জনগুরুত্বপূর্ণ এই পুকুরের উত্তর পাশে হাসপাতাল রোড সংলগ্ন দেয়াল ভেঙে শতাধিক ট্রাকের মাধ্যমে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ পুকুরের প্রায় অর্ধেক ভরাট করা হয়েছে। বরিশাল নগরের পরিবেশবাদীরা উল্লেখিত পুকুর ভরাট বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল বিভাগের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক পরিদর্শনপূর্বক পুকুর ভরাট বন্ধ করতে ও ভরাট করা অংশের বালু অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।