ঢাকা, রবিবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ জুন ২০২৪, ১৫ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

মেয়ের প্রেমিককে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
মেয়ের প্রেমিককে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন

লালমনিরহাট: মেয়ের প্রেমিককে গলা কেটে হত্যার দায়ে মমতাজ উদ্দিন ওরফে ঝগড়ি মন্তাজ (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

এ মামলার বাকি ১৪ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।  

রোববার(৯ জুন) দুপুরে এ আদেশ দেন লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান।

সাজাপ্রাপ্ত মমতাজ আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়ার (রজবপাড়া) বাসিন্দা।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- সাজাপ্রাপ্ত মমতাজ উদ্দিনের স্ত্রী নুরজাহান বেগম, মেয়ে রুমি বেগম, সুমি খাতুন, ছেলে কামাল হোসেন, একই গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ হোসত, মহিষখোচা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান, গোবর্দ্ধন এমএইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হিরু, এরশাদ হোসেন, জিল্লুর রহমান, বকুল মিয়া, শফিকুল ইসলাম, আব্দুস সোবহান, আব্দুস সালাম ও মতিন মিয়া।  

আদালতের রায়ের সূত্রে জানা যায়, আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবধা গ্রামের প্রেমানন্দের ছেলে
জলধর চন্দ্র নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে মমতাজ উদ্দিনের মেয়ে রুমি বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। গত ২০১১ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে গোপনে রুমির ঘরে আসেন তিনি। ওই রাতে বাজার থেকে ফিরে মেয়ের ঘরে অপরিচিত ছেলেকে দেখে তাকে আটক করেন মমতাজ উদ্দিন। পরে আটক জলধর তাকে নিজের পরিচয় গোপন রেখে মিথ্যা পরিচয় দেন। পরদিন সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ হোসতসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা ওই বাড়িতে সালিশ বৈঠকে বসেন। বৈঠকে একপর্যায়ে আসল পরিচয় জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে দা দিয়ে জলধরের গলায় কোপ দেন মমতাজ উদ্দিন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
 
খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায়  নিহতের বাবা প্রেমানন্দ বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত মমতাজ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।  

আলোচিত এ মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সেই সময়ের পরিদর্শক মনিরুজ্জামান। তদন্ত শেষে গত ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল একজনকে অব্যাহতি দিয়ে ১৪ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে আদালত অব্যাহতি গ্রহণ না করে ১৫ জনের অপরাধ আমলে নিয়ে বিচার শুরু করেন।  

আলোচিত এ হত্যা মামলায় আদালাত মোট ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত। দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার সব আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন বিচারক।

তার হাজতবাসের দিনগুলো সাজা থেকে বাদ দিতেও বলা হয় আদেশে।  

লালমনিরহাট আদালত থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাজাপ্রাপ্ত মমতাজ উদ্দিনকে লালমনিরহাট কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।