ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) রামপুরা ভবনে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে সাতদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (০৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকা থেকে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে আটক করা হয়। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২৭ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুনানি শেষে বিচারক তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
সেই রিমান্ড শেষে আজ তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন সিকদার। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১৮ জুলাই বিটিভির রামপুরা অফিসে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি মামলা করেন বিটিভির ঢাকা কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তার। মামলায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারাসহ পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৮ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে ডিআইটি রোডগামী রামপুরা ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও বিটিভি ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। এরপরই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণে অজ্ঞাতনামা তিন-চার হাজার কর্মী বেআইনি জনতায় দলবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
আসামিরা দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বিটিভি ভবনের প্রধান চারটি গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ভবনের ভেতর ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। টেলিভিশন ভবনে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নাম ও পদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুঁজি করে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পরিকল্পিতভাবে অন্তর্ঘাতমূলক সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে ‘ক’ শ্রেণির কেপিআইভুক্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনের ভেতরে থাকা সরকারি মালামাল ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করে। যার ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি রাত ৯টার দিকে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২৪
কেআই/আরআইএস