ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

খুলনায় খালেক-হারুন-মাহাবুবুরের নামে চাঁদাবাজির মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৪
খুলনায় খালেক-হারুন-মাহাবুবুরের নামে চাঁদাবাজির মামলা

খুলনা: খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেসিসির সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক শেখ হারুনুর রশীদ ও খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবুর রহমানের নামে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আনিচুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ডাকবাংলা মোড়ের ব্যবসায়ী শেখ মেরাজ হোসেন।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, আদালতে মামলা দয়েরের পর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে ডেপুটি কমিশনার সিআইডি খুলনাকে সরাসরি তদন্তের নির্দেশ নিয়েছেন এবং মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর। আসামিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ঘুষ, প্রতারণা, জীবননাশের হুমকির মামলাটি দায়ের করেছেন ব্যবসায়ী শেখ মেরাজ হোসেন। মামলায় তিন আসামি। এক নম্বর আসামি হলেন খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবুর রহমান, দুই নম্বর জেলা পরিষদদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ ও তিন নম্বর কেসিসির সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।

মামলার এজাহারের বরাদ দিয়ে বাদী মেরাজ হোসেন বলেন, আমার বাবা শেখ মো. আবুল হোসেন জেলা পরিষদ থেকে আনুমানিক ২৮ বছর আগে ডাকবাংলো মোড়স্থ জেলা পরিষদের মার্কেটের নিজ তলায় অফিস ঘর যথা নিয়মে লিজ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছিলেন। তার বয়স এবং অসুস্থতাজনিত কারণে আমি বড় সন্তান হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা শুরু করি। আমার পিতা ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল আইনের বিধান মোতাবেক আমার অনুকূলে লিখিতভাবে আমাকে দায়িত্ব অর্পন করেন। খুলনা সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে ওই প্লট তথা স্থাপনায় বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণ করে যাবতীয় আইন-কানুন মেনে ‘এ হোসেন এন্টারপ্রাইজ’ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক কোটি টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে ২ জন কর্মচারী নিয়োগ করি। মামলার এক নম্বর আসামি মাহাবুবুর রহমান আমার বাবা শেখ আবুল হোসেনকে ২০২৩ সালের ২০ জুন জেলা পরিষদের কার্যালয়ে ডেকে দাপ্তরিক কাজে প্রয়োজনের কথা বলে তপশিল বর্ণিত বন্দোবস্তকৃত জমির মূল কাগজপত্র তার কাছে জমা দিতে বলেন। আমার বাবা আমাকে সাথে নিয়ে ২৯ জুন এক নম্বর আসামির জেলা পরিষদের কার্যালয়ে গিয়ে তপশিল বর্ণিত সম্পত্তির যাবতীয় মূল কাগজপত্রাদি হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে দুই নম্বর আসামি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের সাথে পরস্পর যোগসাজসে এবং দুই নম্বর আসামির প্রত্যক্ষ মদদে এক নম্বর আসামি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আমার বাবার হস্তান্তরকৃত মূল কাগজপত্রাদি ফেরত দিতে বিভিন্ন তালবাহানা করেন। আমার বাবা আমাকে নিয়ে একাধিকবার দুই নম্বর আসামির সাথে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি। এরপর ওই বছর ১২ জুলাই ১ নম্বর আসামি ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং বলেন অন্যথায় কাগজপত্র ফেরত দেওয়া হবে না। ওই সম্পত্তি জেলা পরিষদ থেকে খুলনা সিটি করপোরেশনের অধীন হস্তান্তর হওয়ার কারণে ওই সম্পত্তির মালিক এখন খুলনা সিটি করপোরেশন হওয়ায় তিন নম্বর আসামি সাবেক কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককেও ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে। টাকা না দিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে এবং আমার সাথের লোকদের জীবনের মায়া ত্যাগ করতে হবে। আমরা এতে ভীত হয়ে এক নম্বর আসামির কাছে অনুনয়-বিনয় করলে এক নম্বর আসামি রিভলবার প্রদর্শন করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বলেন এবং ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলেন। এ বিষয়ে আমি তিন নম্বর আসামির সাথে যোগাযোগ করলে আমার সাথে কোন কথা বলবেন না বলে জানান। ওই চাঁদা এবং ঘুষের দাবি পূরণ না করায় এক নম্বর আসামি আমার কাগজপত্র এখনও ফেরত দেননি এবং ২০২৩ সালের ২১ জুলাই রাত ১০ দিকে তার লোক দিয়ে হাতুড়ি-শাবল, ছানিসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি দিয়ে তপশিল বর্ণিত সম্পত্তি ভেগে ফেলেন। এতে আমাদের দোকানে থাকা ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। সদর থানা এ বিষয়ে মামলা করিনি। আসামিদের এরূপ কর্মকাণ্ডে আমাদের সহায় সম্বলহীন হয়ে রাস্তায় বসে পরার অবস্থা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২৪
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।