ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ শুরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৪
অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ শুরু

ঢাকা: বিচারের জন্য ব্যবহারের উপযোগী করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চলমান সংস্কার কাজের অগ্রগতি দেখতে পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন করেন।

এ সময় চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে ছিলেন।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আইন উপদেষ্টা ও গণপূর্ত উপদেষ্টা সকাল সাড়ে আটায় ট্রাইব্যুনালের ভবন ও ভবন সংলগ্ন এলাকা সব কিছু পরিদর্শনে এসেছিলেন। ওনারা মূলত এসেছিলেন আমাদের পুরাতন যেটা কোর্ট বিল্ডিং, যেটা  ট্রাইব্যুনাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো, এটার সংস্কার কাজ চলছে, সেটার অগ্রগতি দেখার জন্য। তার ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। প্রসিকিউশনের পুরাতন অফিস, সেটার পরিদর্শন করে প্রকৌশলীদের কাছ থেকে কাজের অগ্রগতি জেনেছেন। তাদেরকে তাগিদ দিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব পুরাতন কোর্ট বিল্ডিংটাকে ব্যবহার উপযোগী করে যেন মূল বিচার কাজটা সে ভবনে শুরু করা যায়।

২০০৮ সালে সাধারণ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের অন্যতম রাজনৈতিক ইশতেহার ছিল রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজ করা যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের তারা বিচার করবেন। তারা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেন। এই প্রতিশ্রুতি পূরণে আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য ২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি দেশের জাতীয় সংসদে যুদ্ধ ও মানবাধিকার বিরোধীদের বিচারে আইন পাসের বিল প্রস্তাব করেন। সর্বসম্মতিতে বিল পাস হয়। গড়ে তোলা হয় ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল ও তদন্ত সংস্থা।

তবে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়। সর্বশেষ একটি ট্রাইব্যুনালে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১) চলমান ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের আগে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অবসরে যান। পরে অপর দুই সদস্যের মধ্যে একজনকে হাইকোর্টে ফিরিয়ে আনা হয়। আর অপরজন অব্যাহতি নেন। ফলে কার্যত এখন কোনো বিচারিক প্যানেল নেই। পদত্যাগ করেছেন সব প্রসিকিউটর।

এ অবস্থায় জুলাই আন্দোলনে গণহথ্যা চালানোর অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সে অনুযায়ী গত ৫ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ।

এতে চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আরও চারজন আইনজীবীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আরও একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অন্তত ৫৪ অভিযোগ জমা পড়েছে।

এসব অভিযোগ আনা হয়েছে, দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, তৎকালীন পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সদস্য, র‌্যাবের সাবেক ডিজি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংশ্লিষ্ট সদস্য, ১৪ দলের নেতা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন, পৃথকভাবে ১৪ দলের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৪
ইএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।