ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে রুলের শুনানি মুলতবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে রুলের শুনানি মুলতবি

ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের ওপর চতুর্থ দিনের মতো শুনানি শেষ হয়েছে।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে রোববারের (১০ নভেম্বর) শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৩ নভেম্বর দিন রেখেছেন।

তবে এ দিনের শুনানিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিচারাধীন (ত্রয়োদশ সংশোধনীর রিভিউ) বিষয় আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির আগে হাইকোর্টে বিষয়টির শুনানি বা নিষ্পত্তি হতে পারে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রশ্নটি তোলেন এ মামলায় রুল সমর্থনকারী জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

শুনানি মুলতবি হওয়ার পর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের যেসব বিধান বাতিল করা হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা। এই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছিল ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের রায়ে। এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) তিনটি আবেদন আপিল বিভাগের বিচারাধীন। আগামী ১৭ নভেম্বর শুনানির তারিখ রয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নের রুল শুনানিতে বারবারই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রসঙ্গ আসছিল। যে কারণে প্রশ্ন উঠেছে, আপিল বিভাগে বিষয়টি নিষ্পত্তির আগে হাইকোর্ট সে বিষয়ে শুনানি বা নিষ্পত্তি করতে পারে কি না। সুপ্রিম কোর্টের রীতিনীতি অনুযায়ী তা (শুনানি বা নিষ্পত্তি) করাটা সমীচীন হবে না, যথাযথ হবে না।

এই আইনজীবী বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ বিবদমান পক্ষগুলোকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছেন আদালত।

২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করা হয়।

পরে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনে আওয়ামী লীগ সরকার। এর মধ্যে সুজন সম্পাদক বদিউল আলমসহ ৫ ব্যক্তি, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) তিনটি আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। আগামী ১৭ নভেম্বরের ওপর শুনানির তারিখ রয়েছে। অন্যদিকে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি চলছে হাইকোর্টে।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়; সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়।

এই সংশোধনী বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। পরে এই রুল সমর্থন করে সহায়তাকারী (ইন্টারভেনার) হিসেবে যুক্ত হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরাম প্রমুথ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।