ঢাকা, বুধবার, ১৪ মাঘ ১৪৩১, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ রজব ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ২৯০ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি: ডা. এনামুর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৫
আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ২৯০ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি: ডা. এনামুর ডা. এনামুর রহমান। 

ঢাকা: গত চার মাসে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ২৯০ জন ও বহির্বিভাগে আরও ৫৭৬ জনকে বিনামূল্যে এনাম মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মিরপুর থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির একপর্যায়ে তিনি আদালতে এ কথা বলেন।

 

এদিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতে তাকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।  

রিমান্ড শুনানিতে ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ডা. এনামুর রহমান কোনো রাজনীতিবিদ নন। তিনি রানা প্লাজা ধসের সময় তার এনাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা কার্যক্রমের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। এ পরিচিতির সুবাদে তার ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে সখ্যতা তৈরি হয়। এরপর বিনাভোটে এমপি নির্বাচিত হন এবং তাকে প্রতিমন্ত্রী বানানো হয়। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতা করেছেন এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এই দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে না পারে, এজন্য তার দোসর ও সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তাই এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে তার তদন্ত কর্মকর্তার চাওয়া ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।  

এরপর আসামিপক্ষে আইনজীবী প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিলসহ জামিন আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, সবশেষ সংসদে তিনি এমপি বা মন্ত্রী কিছু ছিলেন না। তার নির্বাচনী এলাকাও এই মামলার ঘটনাস্থল মিরপুর এলাকায় নয়। তিনি হার্টের রোগী। এই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। তাই রিমান্ড বাতিলসহ জামিনের প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হোক।  

শুনানির এ পর্যায়ে ডা. এনামুর রহমান বলেন, আগস্টে এই ঘটনার সময় থেকে আমি আমার হাসপাতালে নির্দেশ দিয়েছিলাম, এই ঘটনায় যারা আহত আসবে তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে। আগস্ট থেকে বিগত চার মাসে আমার এনাম মেডিকেলে ২৯০ জন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে ভর্তি রেখে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছি। এছাড়া বহির্বিভাগে আরও ৫৭৬ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি। আমাদের এই রেজিস্ট্রার দেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলও বিস্মিত হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, জানুয়ারিতে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর আমি হাসপাতাল থেকে বের হইনি। কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমেও অংশ নেইনি। অনেকটা অসুস্থতা ও অনেকটা মন খারাপ থেকে এভাবেই ছিলাম। কোনোভাবেই ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন বা মামলায় বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো অংশগ্রহণ ছিল না।  এরপর বিচারক তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন।

এর আগে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে ডা. এনামুরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন হকার সাগর। তখন এলোপাতাড়ি গুলিতে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জন আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় ৩০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি হলেন এনামুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৫
কেআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।