ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৭ রমজান ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ নিয়ে রিট শুনতে ‘বিব্রত’ বিচারপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ নিয়ে রিট শুনতে ‘বিব্রত’ বিচারপতি

ঢাকা: ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর চারটি ধারার বৈধতা নিয়ে রিট শুনতে বিব্রতবোধ করেছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৭ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আহসানুল করিম ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।

শুনানিতে জয়নুল আবেদীন বলেন, অধ্যাদেশ নিয়ে রিট, বিচারক নিয়োগে কাউন্সিল বিষয়ে…।

তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, ‘আমি এখানে পক্ষ। কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে সভায় ছিলাম। তাই আবেদনটি শুনতে পারছি না। ’

রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলেন আদালত।

এ সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আরজি জানান। পরে আদালত ‘বিব্রতবোধের’ কথা উল্লেখ করে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিষয়টি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। তিনি শুনানির জন্য যে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন, সেই বেঞ্চে রিটের শুনানি হবে।

গত ২১ জানুয়ারি কাউন্সিলের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের বিধান রেখে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর গেজেট জারি হয়।  

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারিকৃত গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের নিমিত্ত বা পরামর্শ প্রদান প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতিকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে, এই অধ্যাদেশ উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাইপূর্বক সুপারিশ করার জন্য একটি স্থায়ী কাউন্সিল থাকবে এবং তা ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ নামে অভিহিত হবে।  

এতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি এই কাউন্সিলের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে থাকবেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে মোট ৭ সদস্যের এই কাউন্সিল গঠন করা হবে। সাত সদস্যের মধ্যে পাঁচজন পদাধিকারবলে সদস্য।  

পদাধিকারবলে সদস্য পাঁচজন হলেন কাউন্সিলের চেয়ারপারসন (প্রধান বিচারপতি), আপিল বিভাগে কর্মে প্রবীণতম একজন বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগে কর্মে প্রবীণতম একজন বিচারপতি (বিচারকর্ম বিভাগ হতে নিযুক্ত নয়), বিচারকর্ম বিভাগ থেকে নিযুক্ত হাইকোর্ট বিভাগে কর্মে প্রবীণতম একজন বিচারপতি ও বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল।  

দুইজন অস্থায়ী সদস্য, যারা কাউন্সিলের চেয়ারপারসন মনোনীত একজন আইনের অধ্যাপক বা আইন বিশেষজ্ঞ এবং আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক কাউন্সিলের সদস্য হবেন।

অধ্যাদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন। এ 

বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়। আইনি নোটিশের জবাব না পেয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন তিনি। অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়।

অধ্যাদেশের ৩ ধারায় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, ৪ ধারায় কাউন্সিল সচিব, ৬ ধারায় কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলী এবং ৯ ধারায় আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ সম্পর্কে বলা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
ইএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।