ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

‘সাদা পোশাকে গ্রেফতারে পরিচয় লাগবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৬
‘সাদা পোশাকে গ্রেফতারে পরিচয় লাগবে’

ঢাকা: সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার করতে হলে পুলিশের পরিচয় দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
 
মঙ্গলবার (২৪ মে) বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ক ফৌজদারি কার্যবিধির দু’টি ধারা নিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের পর এ কথা বলেন তিনি।


 
এর আগে সকালে পরোয়ানা ছাড়া ৫৪ ধারায় গ্রেফতার এবং রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা সংশোধনে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিল খারিজ করে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
 
নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘সাদা পোশাকে নিজেদের পরিচয় না দিয়ে পৃথিবীর কোথাও এভাবে গ্রেফতার করে না। এখন দেখা যাচ্ছে, একজনকে শত্রুতাবশত গায়েব করে ফেলছেন। পরিচয় দিচ্ছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক। আশা করি, এটা বন্ধ হবে’।

তিনি বলেন, ‘সাদা পোশাকে যারা (গ্রেফতার) করবেন, তাদের কাজ হবে আসামিকে অনুসরণ করা, গতিবিধি লক্ষ্য করা। তাকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে নিশ্চয়ই পরিচয় দেওয়া উচিত। আমার মনে হয় না, নিজেদের পরিচয় না দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে গ্রেফতার করতে যায়। এগুলো যারা যাচ্ছেন, তারা নিশ্চয়ই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক না। তারা (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য) ইউনিফর্ম ছাড়া ডিউটিতে যান না। সাদা পোশাকের কাজ হচ্ছে, গতিবিধি ও গোয়েন্দার কাজে নিয়োজিত থাকা। যখন গ্রেফতারের প্রসঙ্গ আসবে তখন পরিচয় দেওয়ার বিষয়টা আসবে’।
 
মাহবুবে আলম বলেন, ‘সংবিধানের কিছু অনুচ্ছেদ আছে, ৩১,৩৫ বা মানবাধিকার সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলো। আদালতের অভিমত হলো যে, আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধি, এভিডেন্স অ্যাক্ট বা পুলিশদের কাজ করা সংক্রান্ত পিআরবি- এ সমস্ত আইনগুলো আর সংবিধান এটা পরিপন্থী হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, সে রায়টি ছিলো কিছু মন্তব্য বা কিছু রিকমান্ডেশন। সংবিধানের যে বিধি-বিধান, তার আলোকে ফৌজদারি কার্যবিধি, এভিডেন্স অ্যাক্ট ইত্যাদি এগুলোতে সংশোধনের প্রয়োজন মনে করে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। এটি আজকে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগ এ বিষয়ে নিজের আবার কিছু মডিফিকেশন দেবেন এবং রদবদল করবেন বলেও উল্লেখ করেছেন’।
 
তিনি বলেন, ‘এখন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আপিল বিভাগ যে রায় দেবেন বা যে সমস্ত নির্দেশনা দেবেন, তার আলোকে আশা করি, সরকার পদক্ষেপ নেবে’।
 
মাহবুবে আলমের মতে, ‘মতবাদের কারণে ডাক্তার ও বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষকদের খুন করা হয়েছে। এ সমস্ত আসামিদের ধরবে পুলিশ বাহিনী। এদিকে আদালতের কিছু নির্দেশনা (আসামি) ধরার ব্যাপারে কি কি করতে হবে- সেগুলো মেনে ও বিবেচনায় নিয়েই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারকে সামনের দিকে এগোতে হবে’।
 
তিনি বলেন, ‘সব সময় আগের থেকে মামলা করে ধরা সম্ভব হয় না। অপেক্ষা করে বসে থাকলে তো সে পালাবে। যেমন, যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার গ্রেফতারের নির্দেশ শুনে পালিয়েছেন। আগে যদি তাকে ধরে ফেলে পরে আদালতের সামনে নিয়ে আসতো, তাহলে তিনি পালাতে পারতেন না। এগুলো জেনারালাইজ করা যাবে না। একেকটা ঘটনায় একেক রকম পদক্ষেপ নিতে হয়। যাই নিতে হোক না কেন, আদালতের নির্দেশের আলোকে নিতে হবে। আদালতও আশা করি, বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করবেন’।
 
মাহবুবে আলম বলেন, আদালতে মূল উদ্বেগ হচ্ছে, যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।