ঢাকা: ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায়ে গৃহকর্মী শহীদুল ইসলাম শহীদের ফাঁসি বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের মধ্যে বাকি চারজনকে খালাস দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- লতিফুর রহমানের বাড়ির কাজের ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান, গৃহকর্মী হাসানের সহকারী বাদল এবং গৃহকর্মী দুই বোন এস্তেমা খাতুন মিনু ও পারভীন।
মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃ্ত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আপিল মামলার এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ১১ মে এ ঘটনায় ফাঁসির আদেশ পাওয়া পাঁচ আসামির আপিলের শুনানি শেষ হলে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রেখেছিলেন (সিএভি) আপিল বিভাগ।
আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান শুনানি করেন।
বাদীপক্ষে ছিলেন সদ্য অবসরে যাওয়া বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, এ এম আমিনউদ্দিন, এ এস এম আবদুল মোবিন ও সরোয়ার আহমেদ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, রায়টি হাতে পাওয়ার পর বিচার-বিশ্লেষণ করে এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
তিনি জানান, রায় দেওয়া এ মামলাটি সিআইডির করা। নিহত শাজনীনের বাবা লতিফুর রহমান প্রথমে যে মামলাটি করেছিলেন, সেটির বিচার চলছিল নিম্ন আদালতে। মঙ্গলবার ওই মামলাটি বাতিল করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন লতিফুর রহমানের মেয়ে স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শাজনীন তাসনিম রহমান। এ ঘটনায় শাজনীনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। পরে সিআইডি আরও একটি মামলা করে।
২০০৩ সালের ০২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ সিআইডির মামলাটিতে শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে তাদের বাড়ির সংস্কার কাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসানসহ ছয়জনকে ফাঁসির আদেশ দেন।
ফাঁসির আদেশ পাওয়া অন্য পাঁচ আসামি হলেন- গৃহকর্মী শহীদুল ইসলাম শহীদ, হাসানের সহকারী বাদল, গৃহকর্মী দুই বোন এস্তেমা খাতুন মিনু ও পারভীন এবং কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল।
পরে এ মামলার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য হাইকোর্টে যায়। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট পাঁচ আসামি হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। আর ফাঁসির আদেশ পাওয়া শনিরামকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন ফাঁসির আদেশ পাওয়া চার আসামি মইনুদ্দিন হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন।
২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। ফাঁসির আদেশ পাওয়া আরেক আসামি শহীদ জেল আপিল করেন। প্রায় সাত বছর পর গত ২৯ মার্চ ওই পাঁচ আসামির আপিলের শুনানি শুরু হয়ে ১১ মে শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৬
ইএস/এএসআর