ঢাকা: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে ২ হাজার ১শ’ ৮১টি অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) এ রায় দেন বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক।
মনজিল মোরসেদ জানান, আদালতের আদেশের পর চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, কর্ণফুলী নদীর তীরে ২ হাজার ১শ’ ৮১টি অবৈধ স্থাপনা আছে। এরপর এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- রায় পাওয়ার পর সাতদিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক অবৈধ স্থাপনা সরাতে স্থানীয় দু’টি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করবেন। বিজ্ঞপ্তি জারির ৯০ দিনের মধ্যে অবৈধ দখলদাররা তাদের স্থাপনা সরাবেন। যদি না সরে, তবে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদফতরের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসক অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করবেন। এরপর হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এ প্রতিষ্ঠানগুলোর বাইরে নৌ-বাহিনী ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ৬টি স্থাপনা নদীর তীরে আছে। ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনাগুলো যদি জনস্বার্থে কাজ করে তাহলে পরিবেশ অধিদফতরের অনাপত্তি নিয়ে তারা থাকতে পারবে।
মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, মামলাটি চলমান থাকবে। যেকোনো সময় যেকোনো পক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
এর আগে গত সপ্তাহে এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১৬ আগস্ট রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
কর্ণফুলী নদী সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদ।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদী সংরক্ষণ এবং নদী দখল করে গড়ে ওঠা স্থাপনা অপসারণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এছাড়া নদীর তীর দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনার তালিকা আদালতে দাখিল করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের নির্দেশের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা ও স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা এবং দূষণ রোধকল্পে নদীর ডান তীরবর্তী (হর প্রান্ত) এলাকা সীমানা চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া কমিটি বিএস ও আরএস জরিপের ম্যাপ অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর অবস্থান, নদীর অংশে ভরাটকৃত জমি ও দখলদারদের অবস্থান পৃথক রং দ্বারা চিহ্নিত করে।
গত বছরের ০৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসনের ওই তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৬
ইএস/এএসআর