ঢাকা: ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ১৫৩ শিক্ষার্থী ভর্তিতে আইনের শর্ত লঙ্ঘন করায় দশটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। জরিমানার অর্ধেক টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এবং বাকি অর্ধেক টাকা কিডনি ও লিভার ফাউন্ডেশনকে দিতে হবে।
দশদিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রোববার (২১ আগস্ট) এ আদেশ দেন।
জরিমানা করা মেডিকেল কলেজগুলো হচ্ছে- শমরিতা মেডিকেল কলেজ, সিটি মেডিকেল কলেজ, নাইটিঙ্গেল মেডিকেল কলেজ, জয়নুল হক শিকদার মেডিকেল কলেজ, এ আর মেডিকেল কলেজ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ, তাইরুন নেছা মেডিকেল কলেজ, আইচি মেডিকেল কলেজ, কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও আশিয়ান মেডিকেল কলেজ।
জরিমানা থেকে পাওয়া অর্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফিক্সড ডিপোজিট করবে। এখান থেকে পাওয়া মুনাফা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি হিসেবে দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অর্থের ওপর ভ্যাট আরোপ না করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জরিমানার অর্থ পরিশোধ সাপেক্ষে কলেজগুলোকে ১৫৩ শিক্ষার্থীর প্রথম পর্বের রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দিতে বলেছেন আপিল বিভাগ।
যদি জরিমানা দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ওই কলেজগুলো শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস/বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় ২০০ এর মধ্যে ১২০ নম্বর পাওয়া ছাত্র/ছাত্রীদের ভর্তি করা যাবে এবং ছাত্র/ছাত্রীদের লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বর পেতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একই সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও।
ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের এ শর্ত পূরণ না হওয়ার পরও ১৫৩ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করায় ওই দশটি মেডিকেল কলেজ।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি হওয়া ওই ১৫৩ শিক্ষার্থীর প্রথম পর্বের (ফার্স্ট প্রফেশনাল এক্সামিনেশেন) রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র আটকে দেয়।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ১৫৩ শিক্ষার্থী। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৩ জুন ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দেওয়ার আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলও জারি করেন।
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিভ টু আপিল করে। গত ১০ আগস্ট শুনানি শেষে ওই ১৫৩ শিক্ষার্থীকে প্রথম পর্বের পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ২১ আগস্ট পরবর্তী শুনানি ও আদেশের দিন ধার্য করে দশ কলেজের চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষকে এর মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেন।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও এ এফ এম মেসবাহ উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাসুদ রেজা সোবহান ও আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৬
ইএস/এএসআর