ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের স্বজনদের নিরাপত্তার নির্দেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৬
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের স্বজনদের নিরাপত্তার নির্দেশ

ঢাকা: হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরীর হাইকোর্ট  বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

বিচারপতির স্বজনরা মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়নে বসবাস করেন।

পুলিশের মহাপরিদর্শক, মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার, রাজৈরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশের উপ-পরিদর্শক সদানন্দ বৈদ্যের প্রতি এ নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘কে ক্ষমতাধর বিচারপতি, নাকি ইউপি চেয়ারম্যান’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে আদালতে দেওয়া বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের এক বক্তব্যে বলা হয়, কদমবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান  বিশ্বাস স্থানীয় আড়ুয়াকান্দি গ্রামের একটি মন্দির থেকে ১৬০ ভোল্টের সোলার প্যানেল চুরি করে তা নিজের শ্বশুরবাড়িতে স্থাপন করেছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সেই সঙ্গে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের সরকারি জায়গা থেকে চারটি গাছ কেটে ব্যক্তিগত ভবনে ব্যবহার করার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

এ অভিযোগের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে নিজে জানানোর পরও তারা কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর। এরপর ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন বেশ কয়েকটি মামলা করে। এসব মামলার পরে ওই চেয়ারম্যান ‘বিচারপতির বিচার চেয়ে’ ব্যানারে লিখে মানববন্ধন করেন। সেখানে বিচারপতির সম্পর্কে মানহানিকর আরও কথা লেখা হয়। এগুলো পরে ফেসবুকেও দেওয়া হয়েছে।  

এদিকে ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট দেওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি।

এরপর সুপ্রিম  কোর্টের আইনজীবী গাজী মোশতাক আহমেদ ও দক্ষিণ কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা মো. ইশতিয়াক আহমেদ একটি রিট দায়ের করেন।

বুধবার ওই রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতির স্বজনদের নিরাপত্তার নিশ্চিত ও বিচারকের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে করা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ৩৭ জনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতেও নির্দেশ দেন আদালত।

এছাড়া রুলও জারি করেন। রুলে হাইকোর্টের এক বিচারপতির কর্তৃত্ব, সম্মান ও মর্যাদাকে হেয় করে করা  বেআইনি সমাবেশ (মানববন্ধন) ঠেকাতে ১৩ বিবাদীর ব্যর্থতাকে কেন তাদের ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা ও পেশাগত ও বিধিবদ্ধ দায়িত্বে অবহেলা হিসাবে ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে ওই বেআইনি সমাবেশের সদস্য, সংগঠক, উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং দুর্দশাগ্রস্থ ও দরিদ্র নারীদের জন্য দেওয়া ভিজিডির চাল আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে কেন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

চার সপ্তাহের মধ্যে জনপ্রশাসন সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, খাদ্য সচিব, বন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, রাজৈরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশের উপ-পরিদর্শক সদানন্দ বৈদ্যসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল  খাইরুন নেসা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।