ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বৃত্তিপ্রাপ্তদের থেকে টিউশন ফি আদায় নিয়ে রুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৬
বৃত্তিপ্রাপ্তদের থেকে টিউশন ফি আদায় নিয়ে রুল

ঢাকা: প্রাথমিক ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায়ের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার  (০৩ অক্টোবর) স্বপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন।

দুই সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত ০২ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বৃত্তিপ্রাপ্তদের কাছ থেকেও টিউশন ফি আদায়!’ শীর্ষক শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা প্রাথমিক ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষায় বৃত্তি পাবে তাদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় করা যাবে না- সরকারের এমন কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না বেসরকারি নামি স্কুলগুলো। ভর্তি ফি, নিবন্ধন ফি, উন্নয়ন ফি, টিউশন ফিসহ সবধরনের ফি’র টাকাই বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করছে এসব প্রতিষ্ঠান। ফলে বৃত্তি পাওয়ার মাধ্যমে ততটা আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে না স্বীকৃত এসব মেধাবীরা।
 
রাজধানীর ভিকারুন-নিসা নূন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন নামি প্রতিষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পুরো মাসিক বেতন (টিউশন ফি) দিতে হচ্ছে। রাজধানীর বাইরেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ প্রবণতা রয়েছে। রংপুরের পুলিশ লাইনস স্কুলসহ অনেক স্কুলে বৃত্তিপ্রাপ্তদের কাছ থেকে অর্ধেক টিউশন ফি আদায় করা হচ্ছে।
 
অথচ বৃত্তির বিষয়ে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, সব মেধাবৃত্তি ও সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ লাভ করবে। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও শিক্ষাবোর্ডের অধিভুক্ত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসিক বেতন (টিউশন ফি) আদায় করতে পারবে না। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন (টিউশন ফি) আদায় করলে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গের জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 
অন্যান্য শিক্ষাবোর্ডেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। কিন্তু বাস্তবে টিউশন ফি আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্থা নেয়নি শিক্ষাবোর্ড বা শিক্ষা অধিদপ্তর।
 
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে তিনজন ছাত্র ও তিনজন ছাত্রীকে প্রাথমিকের সাধারণ ক্যাটাগরিতে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। আর ট্যালেন্টপুলের বৃত্তি নির্ধারিত হচ্ছে উপজেলার পরীক্ষার্থীর সংখ্যার হিসেবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ২০১৫ সালের পরীক্ষায় এবার বৃত্তি পেয়েছে ৮২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ট্যালেন্টপুলে (মেধা কোটায়) বৃত্তি পেয়েছে ৩৩ হাজার ও সাধারণ কোটায় পেয়েছে ৪৯ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী।  ট্যালেন্টপ্রাপ্তদের এবার প্রতি মাসে তিনশ’ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্তদের দু’শ’ পঁচিশ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ১৫০ টাকা।  
 
জেএসসিতে মেধাবৃত্তি পেয়েছে ১৪ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী। সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে ৩১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী। অষ্টম শ্রেণির মেধাবৃত্তি পাওয়ার শিক্ষার্থীরা মাসিক ৪৫০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তরা ৩০০ টাকা করে পাচ্ছে। এছাড়া বই ও যন্ত্রপাতি ক্রয় বাবদ অনুদান হিসেবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী বছরে ৫৬০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তরা বছরে ৩৫০ টাকা করে পাচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় না করতে বোর্ডের নির্দেশনা রয়েছে।
 
সোমবার ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমির হোসেন। এরপর আদালত রুল জারি করেন।

বাংলাদেশ সময়:১৩৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৬
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।