ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থপাচারে সহায়তা করায় চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে গত ২১ জুলাই পলাতক তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা এবং গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘তারেক রহমান গ্রেফতার বা আত্মসমর্পণের পর রায়টি কার্যকর হবে। বিচারিক আদালতকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেওয়া হলো’।
‘এছাড়াও অর্থপাচারে সহযোগিতার জন্য হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, নির্মাণ কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান খাদিজা ইসলাম এবং দুই বিদেশি মেয়ার সাইরি ও মেরিনা জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দেওয়া হলো’।
দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘রায়ে ওই চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা (প্রসিকউট) দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আমি কমিশনকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি। রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেতে আবেদন করেছি। রায়ের অনুলিপি পেলেই তা দুদককে দেওয়া হবে’।
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলাটি করে দুদক। ২০১০ সালের ৬ জুলাই তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়।
২০১১ সালের ০৮ আগস্ট এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। ২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
মামলাটিতে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়, যাদের মধ্যে চার্জশিটের বাইরের সাক্ষী হিসেবে ছিলেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) এজেন্ট ডেবরা লেপরোভেট।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নির্মাণ কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন। সিঙ্গাপুরে এ টাকা লেনদেন হয়।
এরপর মামুন ওই অর্থ সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল স্ট্রিটের সিটি ব্যাংক এনএতে তার নামের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এ টাকার মধ্যে তারেক রহমান তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়ে তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থপাচার মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত।
রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি মামুনকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। পাচার করা ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৬১৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেন আদালত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ০৫ ডিসেম্বর আপিল করে দুদক।
** তারেকের কারাদণ্ড-জরিমানার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৬
ইএস/এএসআর