ঢাকা: ৩৫ লাখ গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা অথবা নগদ ২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা ছয় সপ্তাহের মধ্যে জমা দিলে অর্থপাচারের দুই মামলায় জামিন পাবেন ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন।
রোববার (১৩ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ জামিন দেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদকের) আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান।
তিনি বলেন, আদালত ৬ সপ্তাহের কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। এসব নির্দেশনা পূরণ করলে তারা জামিনে মুক্ত হতে পারবেন। আদালতে আজ তাদের পক্ষ থেকে একটি হলফনামা দেওয়া হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, তাদের কাছে ৩৫ লাখ গাছ আছে। প্রতিটি গাছ আট হাজার টাকা করে বিক্রি করে ২ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা দিতে পারবেন তারা।
এ গাছ বিক্রি করতে দুই আসামি যে কারাগারে আছেন, সেখানে তাদের সঙ্গে গাছ বিক্রির সকল কাগজপত্রে স্বাক্ষর ও আলোচনা করার সুযোগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যানটেশনের সিইও ড. শামসুল হক ভূঁইয়া এমপির তত্ত্বাবধানে সবকিছু হবে। যদি গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা দিতে না পারেন, তাহলে নগদ ২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দেবেন তারা। এর অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠাতে হবে। এরপর যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, যাচাই করে তাদের কাছে টাকা হস্তান্তরের পর জামিনে মুক্তি পাবেন দুই কর্মকর্তা।
খুরশীদ আলম খান বলেন, মোট কথা আদালতের আদেশ প্রতিপালন করলে জামিনে মুক্তি পাবেন তারা।
২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসাইনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দু’টি করে দুদক। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ থেকে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেশন (এমএলএম) ও ট্রি-প্ল্যানটেশন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্য থেকে ৩ হাজার ২৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাত করে পাচারের অভিযোগে রাজধানীর কলাবাগান থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। বর্তমানে এ মামলায় দু’জনই কারাগারে রয়েছেন।
গত ২০ জুলাই হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে ডেসটিনির রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসাইনকে জামিন দেন। পরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর এ আবেদনের ওপর শুনানির এক পর্যায়ে আপিল বিভাগ আত্মসাৎকৃত টাকা জমা দেওয়ার কথা বলেন। সে অনুসারে ডেসটিনির পক্ষ থেকে গাছ বিক্রি করে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়।
আদালতে ডেসটিনির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
ইএস/এএসআর