ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলায় বদরুলের যাবজ্জীবন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৩ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৭
নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলায় বদরুলের যাবজ্জীবন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বদরুল আলম/ছবি: আবু বকর

সিলেট: সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসে হত্যাচেষ্টা মামলায় একমাত্র আসামি বদরুল আলমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে অনাদায়ে আরও ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (০৮ মার্চ) দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত বদরুল আলম আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

 

এর আগে রোববার (০৫ মার্চ) রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন বিচারক।

আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়ার ১৩২ দিনের মাথায় তথা ১১ কার্যদিবসে এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ব নারীদিবসে আদালতের এ রায়ে নার্গিস ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী।  

এর আগে সকাল ১০টায় বদরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আদালত প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে।

গত বছরের ৩ অক্টোবর বিকেলে পরীক্ষা শেষে এমসি কলেজকেন্দ্র থেকে বের হন নার্গিস। ক্যাম্পাসে পুকুরপাড় সংলগ্ন সড়কে তার পথ আগলে দাঁড়ান  বদরুল। হাত ধরে প্রেম নিবেদনের চেষ্টার পরও সাড়া না দেওয়ায় নার্গিসকে উপুর্যুপরি কুপিয়ে জখম করেন। জ্ঞান হারিয়ে মৃতপ্রায় নার্গিস যখন রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়েছেন, তখনও তার দেহে চাপাতি দিয়ে কোপাচ্ছিলেন বদরুল।  

হামলার পর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে ছাত্রজনতা। হামলার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন-সমাবেশ হয়।

রক্তাক্ত নার্গিসকে উদ্ধারের পর সিলেট ওসমানী হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর তাকে সাভারের সিআরপিতে পাঠানো হয়। সেখানে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরেন নার্গিস।

এদিকে, ঘটনার পরদিন (০৪ অক্টোবর) নার্গিসের চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।  
৮ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুনুর রশীদ বদরুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন।

২৯ নভেম্বর সিলেট মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্য দেন ১৭ জন, ১১ ডিসেম্বর নার্গিসের মা-বাবা ও তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৫ জন এবং ১৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্য দেন স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক। সবশেষ ২৬ ফেব্রুয়ারি নার্গিস আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেন।

মামলায় ৩৬ সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১ মার্চ মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ৫ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে ৮ মার্চ এ মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৭/আপডেট ১২৩৭ ঘণ্টা
এনইউ/এসএইচ/জেএম

**
নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলার রায় দুপুরে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।