যদিও সুপ্রিম কোর্টের পঞ্জিকা অনুসারে তার অবসরের মেয়াদ শুক্রবার (০৭ জুলাই)। ওই দিন সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আগের দিন বৃহস্পতিবারই তার শেষ কর্মদিবস।
প্রথা অনুসারে ওইদিন তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের পক্ষ থেকে। জবাবে তিনিও বক্তব্য রাখতে পারেন।
বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা প্রথমবারের মতো নারী বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চেরও নেতৃত্বে ছিলেন।
১৯৫০ সালের ০৮ জুলাই মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা চৌধুরী আবুল কাশেম মঈনুদ্দীন ও মা রশীদা সুলতানা দীন। ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে মুমিনুন্নেসা উইমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি ও আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৬৯ সালে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
নাজমুন আরা সুলতানা ১৯৭২ সালে এলএলবি পাস করেন। একই বছর তিনি ময়মনসিংহ জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হন ।
কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৭৫ সালের ২০ ডিসেম্বর মুনসেফ (সহকারী জজ) হন। হয়ে যান ইতিহাসের অংশ। দেশ ও বিচার বিভাগের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী বিচারক।
যোগ্যতাই তাকে ১৯৯১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজের আসনে উন্নীত করে। আর এটিও প্রথম কোনো নারীর জেলা জজ হওয়ার ঘটনা।
তবে নিম্ন আদালতেই থেমে থাকেনি নাজমুন আরা সুলতানার কর্মজীবন। ২০০০ সালের ২৮ মে তিনি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর হাইকোর্টে স্থায়ী হন। হাইকোর্টেও তিনি প্রথম।
সর্বশেষ ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ০১ এপ্রিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চের নেতৃত্বে বসান বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানাকে।
বিচারিক কাজের পাশাপাশি বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ ওমেন জাজেস অ্যাসোসিয়েশনের। দু’বার সেক্রেটারি ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ওমেন জাজেসের। বিশ্বের ৮২টি দেশে ওই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫ হাজারের মতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৭
ইএস/এএসআর