২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরীকে।
উদ্ধারের সময় তার শরীরে ছিলো অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন।
প্রায় দেড় মাস আদুরীকে চিকিৎসা দেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দেড় মাস পর যখন তাকে রিলিজ দেওয়া হয় তখনও সে ভালোভাবে কথা বলতে পারতো না। শরীর ছিলো প্রচণ্ড দুর্বল। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ৭ নভেম্বর চলে যায় নিজ বাড়ি পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের নিজ গ্রামে।
আদুরীর মামলা পরিচালনাকারী বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট ফাহমিদা আক্তার রিংকি বাংলানিউজকে জানান, আদুরী এখন তাদের গ্রামের বাড়িতেই আছে। মামলা রায়ের দিন তাকে ঢাকা আনার চেষ্টা করা হবে।
এ ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা করা হয়। তবে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনিকে বাদ দেওয়া হয়। তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।
মামলার পর ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় নদীকে। সেই থেকে নদী কারাগারে আটক আছেন। জামিনে আছেন তার মা ইসরাত জাহান।
গ্রেফতারের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরীকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ওই বছরের ১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নদী। আদুরীও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) কুইন আক্তার। ২০১৪ সালের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন আদালত।
যুক্তিতর্ক শুনানির আগে ১৩ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৭
এমআই/এমজেএফ