ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বনানীর দুই তরুণী ধর্ষণে সাফাত-নাঈমদের বিচার শুরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৭
বনানীর দুই তরুণী ধর্ষণে সাফাত-নাঈমদের বিচার শুরু আসামি সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ ও সাদমান সাকিব (ফাইল ফটো)

ঢাকা: রাজধানীর বনানীর রেইন-ট্রি হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণ মামলায় আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমসহ ৫ জনের অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।

আগামী ২৪ জুলাই থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করা হয়েছে। অন্য তিন আসামি হচ্ছেন- সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিব, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন।

আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈমকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় সরাসরি ধর্ষণ এবং সাদমান, রহমত ও বিল্লালকে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতায় অভিযুক্ত আনা হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেবেন মোট ৪৭ জন সাক্ষী।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) চার্জ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম।

গ্রেফতারকৃত পাঁচ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। দোষী না নির্দোষ জিজ্ঞাসা করা হলে নিজেদেরকে নির্দোষ দাবি করেন তারা।  

আসামিপক্ষে শুনানি করেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু।

গত ০৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

গত ১১ জুন সিএমএম আদালত থেকে মামলাটি বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়। গত ১৯ জুন মামলার চার্জশিট আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

৫ আসামির মধ্যে রহমত আলী ছাড়া বাকি সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।

গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ০৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

তরুণীদের একজনের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তারা ওই দুই শিক্ষার্থীর বন্ধু। ঘটনার দিন গত ২৮ মার্চ আসামি সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান ওই দুই ছাত্রী।

এরপর ওইদিন রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত তাদেরকে আটকে রাখেন আসামিরা। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যান আসামিরা।

আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ একাধিকবার তাদের ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের সময় আসামি সাফাত গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করান। পরে বাসায় দেহরক্ষী রহমতকে পাঠিয়ে তাদের ভয়-ভীতি দেখান।
ভয়ে ও লোক-লজ্জার কারণে এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

মামলার ৫ দিন পর গত ১১ মে আদালতে জবানবন্দি দেন ওই দুই তরুণী। ওইদিনই সিলেট থেকে প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে, ১৬ মে রাতে পুরান ঢাকা থেকে সাফাত আহমেদের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলীকে এবং ১৮ মে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থেকে নাঈম আশরাফকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বাংলা‌দেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।