হট্টগোলপূর্ণ সংবাদ সম্মেলেনে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) এসব কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভেকেট জয়নুল আবেদীন।
সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলনস্থলে আসেন।
একইসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এসে সামনের সারিতে আসন নেন সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
এর কিছুক্ষণ পরেই সমিতির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ওজিউল্লাহ’র নেতৃত্বে সমিতির আওয়ামীপন্থি সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে এসে উপস্থিত হন। তাদের সঙ্গে আসেন সমিতির সাবেক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিমসহ আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরাও।
সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। লিখিত বক্তব্য দেন সভাপতি জয়নুল আবেদীন।
লিখিত বক্তব্যের মধ্যেই শুরু হয় হট্টগোল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক মুন সিনেমা হলের অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলার রায় দিতে গিয়ে উদ্দেশ্যমূলক পূর্বপরিকল্পিত অপ্রাসঙ্গিকভাবে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করেছেন’।
‘তিনি পঞ্চম ও ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায়কেও বির্তকিত করেছেন। এ কারণে বিচারপতি খায়রুল হক ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে পূর্বপরিকল্পনার গন্ধ পাচ্ছেন’।
‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে খায়রুল হক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন’- মন্তব্য করেন জয়নুল আবেদীন।
সভাপতির এমন বক্তব্যে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা করতালি দিলেও হট্টগোল করতে থাকেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা।
এ হট্টগোলের মধ্যেই জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে খায়রুল হক যে রায় দিয়েছেন, ওই রায়ের কারণেই দেশে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছেন’।
সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমি দলীয় বক্তব্য দিতে আসিনি, আইনজীবী সমিতির সকলের পক্ষে বক্তব্য দিতে এসেছি’।
কিন্তু তার এ বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে হট্টগোল করে প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা।
সভাপতির বক্তব্য শেষ হলে আওয়ামীপন্থি আইনজীবী ও সমিতির সহ সভাপতি ওয়াজি উল্লাহ বক্তব্য দিতে চাইলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলনের ব্যানার খুলে নিয়ে যান।
এ নিয়ে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এরপর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মিলনায়তন ত্যাগ করলে সমিতির সহ সভাপতি ওজিউল্লাহ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘সমিতির সভাপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা একান্তই তার নিজের বক্তব্য। এ বক্তব্য আইনজীবী সমিতির নয়’।
কিন্তু সমিতির সভাপতির বক্তব্যের সময় তিনিও পাশে বসা ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
ইএস/এএসআর