রোববার (১৩ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বি এম সুলতান মাহমুদ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ‘বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দিয়েছেন।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে বিচারপতি খায়রুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের ক্ষমতা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় গত বুধবার (০৯ আগস্ট) বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক মন্তব্য করেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে সংসদ বা এমপিদেরকে অপরিপক্ক বলে সমালোচনা করা হয়েছে। এটি ঠিক নয়, উচিৎ নয়’।
তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি যদি বলেন, সংসদ অপরিপক্ক বা সংসদ সদস্যরা অপরিপক্ক, তাহলে তো আমাকে বলতে হয়, অবশ্যই যুক্তিতে চলে আসে যে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরাও তাহলে ‘অপরিপক্ক’। কারণ, তারাও তাদের রায়ের মধ্যে যা তাদের বলার দরকারই ছিল না, সংসদ সদস্যদের বিষয়ে সেসব বলেছেন’।
‘হাইকোর্টের রায়ে বলার কারণে আপিল বিভাগকে একই ধরনের প্রত্যাহার (এক্সপাঞ্জ) পর্যন্ত করতে হয়েছে। যদি সুপ্রিম কোর্টকে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের অংশবিশেষ এক্সপাঞ্জ করতে হয়, তাহলে তো দৃশ্যমান যে, এটিও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের ‘অপরিপক্কতা’। না হলে এক্সপাঞ্জ করার প্রয়োজনীয়তা কেন থাকবে?’
‘আমরা যদি পরস্পর পরস্পরকে সম্মান করতে না শিখি, একে অপরের প্রতি যদি অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করি, তাহলে যারা বলছেন- সেই দুই পক্ষই তাদের ‘অপরিপক্কতা’ প্রমাণ করেন’।
‘আমরা এতোকাল জেনে এসেছি- এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। কিন্তু এ রায়ের পরে মনে হচ্ছে, আমরা আর বেশি দিন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে থাকছি না। আমরা গণবিচারপতিতন্ত্রী বাংলাদেশে যাচ্ছি। কারণ, জনগণ তো সরে গেলো এখান থেকে’- বলেন বিচারপতি খায়রুল হক।
গত ০১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। গত ০৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
এমএএম/এএসআর