আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতিসহ মোট ছয়জন বিচারপতি রয়েছেন। প্রধান বিচারপতির পর রয়েছেন যথাক্রমে বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
সোমবার (০২ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আইনে এটি সচরাচর দেখা গেছে যে, প্রধান বিচারপতির অবর্তমানে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিই এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
‘অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ’ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান বিচারপতি তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলে রাষ্ট্রপতির কাছে সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হলে ক্ষেত্রমত অন্য কোনো ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করবেন’।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একমাসের ছুটির কথা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন। ফলে মঙ্গলবার (০৩ অক্টোবর) আপিল বিভাগের বেঞ্চে বসবেন না তিনি। অন্য বিচারপতিরা বিচারকাজ পরিচালনা করবেন।
প্রধান বিচারপতি ছাড়া আপিল বিভাগের এক নম্বর কোর্টের অন্য দুই বিচারপতি হচ্ছেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবারের কার্যতালিকায়ও তাদের দু’জনের নাম দেখা গেছে।
দুই নম্বর কোর্টে বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে রয়েছেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
প্রধান বিচারপতির ছুটির বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, ‘তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিছেন, সেটিতো আমি দেখিনি। তবে সাংবিধানিক পদে যারা থাকেন, তাদের এটি বলার প্রয়োজন পড়ে না। তিনি ছুটিতে যাবেন- এটিই জানানো, যেন সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে’।
‘এখন কে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন রাষ্ট্রপতি। তার এ ছুটির সময়ে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন সম্পর্কে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে’।
ছুটিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের প্রভাব আছে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় তো তিনি একা দেননি। অন্য বিচারপতিরাও ছিলেন, সর্বসম্মতভাবে রায় দিয়েছেন। সুতরাং এখানে রায়ের জন্য প্রধান বিচারপতিকে একা দায়ী করা হবে, তা ঠিক নয়’।
এর আগে দুপুরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমি শুনেছি, অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে একমাসের ছুটি চেয়েছেন তিনি (প্রধান বিচারপতি)। তবে, আবেদনপত্রটি এখনো আমার কাছে আসেনি’।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির ছুটি চাওয়ার খবরটি সঠিক। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অন্য বিচারপতিরা বসবেন’।
এখন প্রধান বিচারপতির ছুটিতে যাওয়ার আবেদনপত্র নিয়ে আইনসচিব আইনমন্ত্রীর বাসায় যাবেন। তিনি দেখার পর এটি নিয়ম অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হবে। তারপর সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিকালে আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারককে প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব দেবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপন জারি করবে আইন মন্ত্রণালয়।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি ২১তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৭
ইএস/এএসআর
** একমাসের ‘ছুটি’ চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি