ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পূর্ণাঙ্গ রায় দিতে আরও সময় লাগতে পারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
পূর্ণাঙ্গ রায় দিতে আরও সময় লাগতে পারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ছবি: কাশেম হারুন/বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) বিদ্রোহ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় দিতে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। 

রোববার (২৬ নভেম্বর) হাইকোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান।
 
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় নিম্ন আদালত ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।

এই রায়ের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে আপিল করা হলে এক বছর শুনানি শেষে আদালত আজ রায় দেওয়া শুরু করেন।
 
‘৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন হত্যা যেমন একটি জঘন্য ঘটনা ছিলো তেমনি এ মামলার রায়ও একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ’ 

মাহবুবে আলম বলেন, তিনজন বিচারপতির বেঞ্চ এ মামলায় একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে রায় সম্পর্কে তাদের অবজারভেশন ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।    

আরও পড়ুন>>
 
** বিডিআর হত্যাযজ্ঞের আপিলের রায় ঘোষণা চলছে

‘নিম্ন আদালতের রায়ে বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে ১১৯টি আপিল আবেদন করা হয়। আর ৬৯ জন আসামির খালাস দেওয়ার বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ একটি আপিল করেছিলো। হাইকোর্টে মামলাটি এক বছরের বেশি সময় শুনানি হয়েছে। আজকে রায় দেওয়া শুরু হলো। রায়ের উপক্রমনিকা পড়েছেন বেঞ্চের বিচারপতি শওকত  হোসেন, তারপর বিচারপতি জাফর সিদ্দিকী পর্যবেক্ষণ পড়েছেন এবং দুপুরের পর বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার রায় পড়বেন,’ বলেন তিনি।
 
সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম।  ছবি: কাশেম হারুন ‘সোমবার (২৭ নভেম্বর) মামলার পর্যবেক্ষণসহ রায়ের অন্য অংশ পড়া শুরু করা হবে। সমস্ত রায় পড়া হলে বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। ‍তবে উনারা রায়ের সবটা নাও পড়তে পারেন। পর্যবেক্ষণ পড়ে তারা হয়তো তাদের অর্ডারের অংশে চলে যাবেন। আজকে অর্ডারের অংশ পড়বেন বলে মনে হয় না। ’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রায়ে ক’জন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে, ক’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকবে, ক’জনের সাজা বহাল থাকবে এবং কোন কোন আসামির দণ্ড খালাস হবে বা মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন করা হবে, এই ব্যাপারে তিনজন বিচারপতি ঐক্যমতে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে যার যার পর্যবেক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
 
‘‘বিচারপতি জাফর সিদ্দিকী বলেছেন, যে সমস্ত আসামিদের সাজা বহাল রাখা হবে, সাজা বহাল রাখার স্বপক্ষে তার যুক্তি ও পর্যবেক্ষণ এটা তারা দেখাবেন। যাদের সাজা মওকুফ করা হবে তাদের ব্যাপারেও তাদের যে পর্যবেক্ষক ও যুক্তি তা বিস্তারিতভাবে দেখাবেন। ’’
 
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রায় পড়া শেষ না হলে বুঝা যাবে না মোট কত পৃষ্ঠার রায়। একই দিনে ৭৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, তার মধ্যে ৫৭ জন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। কোনো দেশের সামরিক ক্যু তে এতো হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে আমার জানা নেই এবং এই মামলা ১৫২ জনের ফাঁসির আদেশ। বাংলাদেশে তো সর্বোচ্চই, আমার মনে হয় না পৃথিবীর কোনো দেশে এতো সংখ্যাক লোকের দণ্ড প্রদান করা হয়েছে।  

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমদিনে বিচারপতিরা তাদের অবজারভেশনের অংশগুলো তারা শুনিয়েছেন এবং তারা বলেছেন, তারা এ মামলার পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্ট তারা শোনাতে চান।  

‘ঐক্যমতের ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রত্যেকটি অ্যাসেসমেন্ট, অবজারভেশন প্রকাশ্যে আলোচনা করতে চান। আজকে একবেলা শুনিয়েছেন, দুপুরের পর আবারও বসবেন। যতোদিন আলোচনা শেষ না হবে ততোদিন চলবে।

এর আগে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট থেকে বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ (বৃহত্তর) হাইকোর্ট বেঞ্চ আলোচিত হত্যা মামলাটির রায় ঘোষণা শুরু করেন।  

বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭/আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা
পিএম/এমএসি/বিএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।