ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা আদালতের পথে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা আদালতের পথে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার। ছবি: বাংলানিউজ

গাজীপুর: আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ৩১ জন আসামিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার রায় ঘোষণাকালে আসামিদের উপস্থিত রাখতে বুধবার (১০ অক্টোবর) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে বাড়তি নিরাপত্তা দিয়ে তাদের পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১ ও ২ (ভারপ্রাপ্ত) এর জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বাংলানিউজকে জানান, কেন্দ্রীয় কারাগার ১ ও ২- এ থাকা ১৪ আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টুও রয়েছেন।

আর কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, হাইসিকিউরিটিতে থাকা ১৭ জন আসামিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

হাইসিকিউরিটি কারাগারে থাকা ১৭ আসামিই হুজি নেতা।

আর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১ ও ২-এ থাকা আসামিদের মধ্যে বাবর-পিন্টু ছাড়াও রয়েছেন হুজি নেতা আরিফ হাসান সুমন ও মওলানা আব্দুর রউফ, পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, অতিরিক্ত আইজি খোদা বকস, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমীন, এএসপি আব্দুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমান, ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা আরিফুর রহমান আরিফ, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।

অধিকতর তদন্ত শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। তখন জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হামলার ছক করা হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে এসেছিল হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দুই বছর তদন্তের পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা হয় ৫২।

সম্পূরক চার্জশিটে যে ৩০ জনকে আসামি করা হয় তারা হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও জোট সরকারের মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বকস, ডিএমপির তৎকালীন উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান, সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, হুজির আমির মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মাওলানা আবদুর রউফ, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, ডিজিএফআইর সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার (বরখাস্ত), বিএনপির ঢাকা মহানগর নেতা আরিফুর রহমান, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, সিআইডির বিশেষ সুপার রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মো. হানিফ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও বাবু ওরফে রাতুল বাবু।

আসামিদের মধ্যে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও মুফতি হান্নান এবং তার সহযোগী শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় কার্যকর হয়েছে। তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় এ মামলার বর্তমান আসামির সংখ্যা ৪৯ জন।  

আসামিদের মধ্যে ৩১ জন কারাগারে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন বাকি ১৮ জন, তারা হলেন- তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, এটিএম আমিন, সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, খান সাঈদ হাসান, ওবায়দুর রহমান, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, রাতুল বাবু, মোহাম্মদ হানিফ, আবদুল মালেক, শওকত হোসেন, মাওলানা তাজউদ্দিন, ইকবাল হোসেন, মাওলানা আবু বকর, খলিলুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮/আপডেট ০৮৪৫ ঘণ্টা
এজেডএস/আরএস/এএটি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।