ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাজির না হলে যমুনা ব্যাংক এমডিকে গ্রেফতারের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
হাজির না হলে যমুনা ব্যাংক এমডিকে গ্রেফতারের নির্দেশ

ঢাকা: যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিকুল আলম ১২ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির না হলে মতিঝিল থানার ওসিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তলবাদেশে হাজির না হওয়ায় মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
 
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন।

সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শুভ্রজিত ব্যানার্জি। এমডির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম ভূইয়া। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ।
 
পরে এবিএম আলতাফ হোসেন বলেন, এক গ্রাহকের রাখা অর্থ (এমটিডিআর) দিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন না করায় যমুনা ব্যাংকের এমডিকে তলব করা হয়েছিল। ২৯ জানুয়ারি তার ব্যক্তিগত হাজিরার তারিখ ছিল। কিন্তু যমুনা ব্যাংকের এমডির আইনজীবী আদালতকে জানায়, তিনি দেশের বাইরে। এ জন্য তারা ক্ষমা চান। পরে আদালত তাকে ১২ ফেব্রুয়ারি ফের তলবের নির্দেশ দেন। যদি তিনি হাজির না হন তাহলে তাকে গ্রেফতার করে হাজির করতে মতিঝিল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া আদলত অবমাননার রুলও শুনানির জন্য ওইদিন তারিখ নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।   
 
২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট এ বিষয়ে ওই গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার রুলও জারি করেছিলেন।

ওই সময় আলতাফ হোসেন জানিয়েছিলেন, ২০০৫ সালে ৫ বছরের জন্য তালেবুর নুর নামে এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী যমুনা ব্যাংকের নওয়াবপুর শাখায় ৫১ লাখ টাকার একটি মুদারাবা সঞ্চয়ী (এমটিডিআর) হিসাব খোলেন। এ তালেবুর নুরের সঙ্গে এআইএম হাসানুল মুজিব যৌথভাবে ২০০৬ সালে তুরস্ক থেকে ২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করেন। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় তালেবুর নুর দেনাদার হন। এ কারণে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে তার ওই যমুনা ব্যাংকের ৫১ লাখ টাকার মালিকানা হাসানুল মুজিবকে দেন। এরপর ২০১১ সালে হাসানুল মুজিব টাকা তুলতে যমুনা ব্যাংকের নওয়াবপুর শাখায় আবেদন করেন। কিন্তু ব্যাংক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত শেষে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেয়।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল মালিককে হাজির করতে হবে অথবা বিষয়টি যমুনা ব্যাংক নিষ্পত্তি করবে। এরপর টাকার জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন হাসানুল মুজিব। এ রিট আবেদনের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ৩০ দিনের মধ্যে রিট আবেদনকারীকে টাকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে যমুনা ব্যাংক। কিন্তু আদালত কোনো স্থগিতাদেশ দেননি। এ অবস্থায় টাকা চেয়ে যমুনা ব্যাংকের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান হাসানুল মুজিব। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় তিনি আদালত অবমাননার আবেদন করেন।  

টাকা দেওয়ার নির্দেশের পর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে গেলেও সাড়া পায়নি যমুনা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। আপিল বিভাগে তাদের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তারপরও টাকা না পেয়ে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলায় যমুনা ব্যাংকের এমডিকে তলবের আবেদন করেন হাসানুল মুজিব। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ জানুয়ারি যমুনা ব্যাংকের এমডিকে তলব করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।