মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলএলএম ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুলা) নবীন বরণ, ফাগুন উৎসব ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের এ আয়োজন করে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সঙ্গে আমার নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। আমার পরম শ্রদ্ধেয় পিতা মরহুম সৈয়দ মোস্তফা আলী আইন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন। তার কাছেই আমার আইন পেশার হাতেখড়ি। তাছাড়া আমার সহধর্মিণী সামিনা খালেক এ বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
‘ডুলার কার্যক্রম নিঃসন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। ’
তিনি বলেন, ‘একজন আইনজীবীর জীবন কখনই মসৃণ নয়। বিভিন্ন চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে হয়। এরজন্য প্রয়োজন একাগ্র নিষ্ঠা, সময়ানুবর্তিতা, ধৈর্য্য, সততা, পরিশ্রম এবং নিরন্তর অধ্যয়ন। প্রতিটি মামলা পরিচালনায় তার শিক্ষা, মেধা এবং বিচক্ষণতার প্রয়োগ হতে হবে। জেনে-শুনে মামলার ঘটনার বিকৃত উপস্থাপনা করা একজন আইনজীবীর কখনই উচিত নয়। ’
‘সঠিক সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং আইনি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে আদালতকে সহায়তা করা মূল উদ্দেশ্য। আইন পেশার সুমহান মর্যাদা রক্ষা করতে সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে বার ও বেঞ্চকে সোচ্চার থাকতে হবে। আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য নবীন আইনজীবীদের নিরন্তর অধ্যয়ন করতে হবে,’ যোগ করেন প্রধান বিচারপতি।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে অনার্স-মাস্টার্স পাস করার পর আপনারা অনেকেই আইন পেশা এবং উচ্চ ও নিম্ন আদালতে বিচারক হিসেবে নিয়োজিত আছেন। আইন পেশা সারা বিশ্বে এমন একটি পেশা হিসেবে স্বীকৃত; যাতে শিক্ষিত, জ্ঞানী-গুণী, সমাজের শ্রদ্ধেয় ও সংস্কারমুক্ত ব্যক্তিদের সমাগম ঘটে। ’
প্রধান বিচারপতি বলেন, একজন আইনজীবীকে সর্বোপরি, অবশ্যই সৎ থাকতে হবে এবং উচ্চ নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে হবে। কেননা বিচার নিষ্পত্তির সঙ্গে এর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আর সে কারণেই ব্যক্তিগত স্বার্থের চাইতে আদালতের প্রতি কর্তব্য এবং মক্কেলের প্রতি সেবার বিষয়টিই সবার আগে বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, ডুলা শুধুমাত্র এর সদস্যদের কল্যাণেই নয় বরং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানব-উন্নয়নসহ দরিদ্র, সহায়-সম্বলহীন জনগণকে প্রো বোনো তথা আইনগত সহায়তা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
ডুলার সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলপথ নূরুল ইসলাম সুজন, আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, ডুলা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়নুল আবেদীন, ডুলা’র সম্পাদক শেখ আলী আহমেদ খোকন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
ইএস/এমএ