ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

নিম্নমানের ৩ পানি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল, ৭টির স্থগিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
নিম্নমানের ৩ পানি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল, ৭টির স্থগিত

ঢাকা: বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজারে থাকা অনুমোদিত ১০টি ব্র্যান্ডের বোতল ও জারের পানি নিম্নমানের।
 

গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিএসটিআই’র এক কার্যক্রমের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। অভিযোগ ওঠা ১০টি কোম্পানির মধ্যে সাতটির লাইসেন্স স্থগিত এবং ৩টির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।


 
লাইসেন্স স্থগিত হওয়া কোম্পানিগুলো হলো- সেফ ইন্টারন্যাশনালের ‘ক্যানি’ ব্র্যান্ড (জার), সিনহা বাংলাদেশ ট্রেড লিমিটেডের ‘এ্যাকুয়া মিনারেল’ ব্র্যান্ড (ছোট বোতল), এএসটি বেভারেজ লি. এর ‘আলমা’ ব্র্যান্ডের (ছোট বোতল), মেসার্স ক্রিস্টাল ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এর ‘সিএফবি’ ব্র্যান্ড (জার), মেসার্স ইউরোটেক ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির ‘ওসমা’ ব্র্যান্ড (জার), ইউনিটি অ্যাগ্রো বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ এর ‘এপিক’ ব্র্যান্ড (জার), ফ্রুটস অ্যান্ড ফ্লেভার্স এর ‘ইয়াম্মী ইয়াম্মী’ ব্র্যান্ড (পেট বোতল)।
 
লাইসেন্স বাতিল হওয়া কোম্পানিগুলো হলো- আনন্দ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এর ‘আনন্দ প্লাস’ ব্র্যান্ড (জার), রিয়েল ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এর ‘রিয়েল ফার্স্ট’ ব্র্যান্ড (জার), বেস্টওয়ান ড্রিংকিং এর বেস্ট ওয়ান।
 
এ প্রতিবেদন মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়।
 
এরপর আদালত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন, পানি নিয়ে তারা কী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সেটি আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে জানাতে হবে।
 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি মো. মোখলেছুর রহমান। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ছিলেন মো. জে আর খাঁন রবিন। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহম্মদ ফরিদুল ইসলাম (ফরিদ)।
 
বিএসটিআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সময়ের মধ্য ৬৯টি সার্ভিলেন্স টিম পরিচালনা করে ৩৩৫৭৫টি অবৈধ পানির জার/জব্দ, ৬৫টি নিয়মিত মামলা করা হয়।
 
‘পরীক্ষার জন্য বাজার থেকে ২৮টি পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২টির প্রতিবেদনের মধ্যে ১২টি মানসম্মত এবং ১০টি নিম্নমানের। এ ১০টিকে শো’কজের পর ৩টি কোম্পানি জবাব দেয়নি। তাই তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। বাকি ৭টি শো’কজের জবাব দিয়ে মানোন্নয়নের জন্য সময় চেয়েছে। এ কারণে তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স না থাকায় ৩৬ কারখানার উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। ’
 
আইনজীবী মুহম্মদ ফরিদুল ইসলাম ফরিদ জানান, আজকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ পক্ষভূক্ত হয়েছে। এরপর আদালত পানি নিয়ে আমাদের কার্যক্রম জানতে চেয়েছে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে।
  
এর আগে ২১ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে ১৫টি ব্র্যান্ডের (জার ও বোতলের) খাবার পানি পরীক্ষা করে বিএসটিআই বলেছে ৫টি মানহীন।

ওইদিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান খোকন বলেন, এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বোতল ও জারের পানি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। এরপর এ পর্যন্ত ১৫টি কোম্পানির পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন পেয়েছি। বিএসটিআই’র এ পানি পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায়  পাঁচটি ব্র্যান্ডের পানি মানহীন বা পান অনুপযোগী। এছাড়া বাকি যে কোম্পানির পানি পরীক্ষা করা হচ্ছে সেগুলোরও প্রতিবেদনও দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রতি দুই সপ্তাহে একবার বাজার থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআইকে পরীক্ষা অব্যাহত রাখতে বলেছেন হাইকোর্ট।    
 
ওই ৫ কোম্পানি হলো- ফ্রুটস অ্যান্ড ফ্লেভার লিমিটেডের ‘ইয়াম্মি ইয়াম্মি’, সিনহা বাংলাদেশ ট্রেডস লিমিটেডের ‘এক্যুয়া মিনারেল’, ক্রিস্টাল ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘সিএফবি’, ওরোটেক ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির ‘ওসমা’ ও শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয় লিমিটেডের ‘সিনমিন’ নামের বোতলের পানি মানহীন এবং পান অনুপযোগী। ’
 
গত বছরের ২২ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘প্রতারণার নাম বোতলজাত পানি’ শিরোনামের প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ২৭ মে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন আইনজীবী শাম্মী আক্তার।
 
পরে এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বাজারে থাকা অবৈধ-অনিরাপদ জার ও বোতলের পানির সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬,২০১৯
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।