ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রূপপুর: দুই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে পাঠাতে হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৯
রূপপুর: দুই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে পাঠাতে হবে

ঢাকা: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্রসহ অন্য আনুষঙ্গিক কাজের দরপত্রের বিষয়ে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি চেয়ে করা রিটের শুনানি স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (২০ মে) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ওই ঘটনায় গণপূর্তের করা দু’টি তদন্ত কমিটির কথা উল্লেখ করে বলেন, এরই মধ্যে দু’টি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। এ রিপোর্টটা আগে আসুক। তারপর যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সে পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার রাখা যেতে পারে।   

আদেশের পর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, গ্রিন সিটি আবাসন পল্লিতে ফার্নিচার, বিভিন্ন বালিশসহ জিনিসপত্র তোলার নামে দুর্নীতির যে অভিযোগ, সে অভিযোগ নিয়ে গতকাল একটা রিট করেছি। এর মধ্যে গতকাল বিষয়টি তদন্তে গণপূর্ত বিভাগ দু’টি তদন্ত কমিটি করেন। আজকে আমরা শুনানি করি। অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করেছেন। আমরা বলেছি আমরা একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনকোয়ারি কমিটি চাই, আমরা জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি চাই। আমরা বলেছি প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখিয়েছেন। আমরা এখানে বসে থাকতে পারি না। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন দু’টি কমিটি গঠন হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা আছে। আদালত দুই পক্ষের কথা শুনে সাত দিনের মধ্যে যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা, সেটা হাইকোর্ট রিওপেনিংয়ের (ঈদের ছুটির পর) এক সপ্তাহের মধ্যে জমা হবে। এ রিপোর্ট আসার পর এটাকে সামনে নিয়ে আবার শুনানি করতে স্ট্যান্ডওভার রাখা হয়েছে।  

রোববার ব্যারিস্টার সুমন জানান, গ্রিন সিটিতে অস্বাভাবিক মূল্য ধরা হয়েছে। এটা কয়েকটা পত্রিকায় এসেছে। তাই আমরা নিয়ে এসেছি। একটা বালিশের দাম ধরা হয়েছে প্রায় ছয় হাজার টাকা। কেটলি নিচ থেকে উপরে নেওয়ার দাম ধরা হয়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা। এটা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। গণপূর্ত বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি করেছে। গণপূর্ত বিভাগের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সুতরাং ওনারা নিজেরা তদন্ত করতে পারেন না। এটা জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি থাকা দরকার। এজন্য রিট করেছি।   

এদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্রসহ অন্য আনুষঙ্গিক কাজের দরপত্রের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তা তদন্তের জন্য দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রোববার (১৯ মে) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসেবে গণপূর্ত অধিদপ্তর নির্মাণাধীন ৬টি ভবনে আসবাবপত্রসহ অন্য আনুষঙ্গিক কাজের জন্য দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়নপূর্বক ৬টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্যাকেজগুলোর প্রতিটির ক্রয়মূল্য ৩০.০০ কোটি টাকার নিম্নে প্রাক্কলন করায় গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ’

এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে আলাদা দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের পেমেন্ট বন্ধ রাখতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এরইমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আলোচ্য কাজের বিপরীতে এখনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৯
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।