ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মামলার তদন্তে কোনো অবহেলা ছিল না: পিবিআই কর্মকর্তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
মামলার তদন্তে কোনো অবহেলা ছিল না: পিবিআই কর্মকর্তা

ফেনী: গত ৬ এপ্রিলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাষ্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসক ওবায়দুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট চিকিৎসক দল সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুকালীন জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতের মাধ্যমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলমের কাছে জানতে চান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পিবিআই’র একজন সহকারী পুলিশ সুপারসহ দু’জন কর্মকর্তা বার্ন ইউনিটের বাইরে সার্বক্ষণিক ডিউটিতে ছিলেন। তারা চিকিৎকদের ভুল বুঝিয়ে নুসরাতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, গত ২৭ মার্চ দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইকবাল আহমেদের আবেদেনের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ এপ্রিল রাতে নুসরাতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। নুসরাত হত্যা মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তরিত হয় ১০ এপ্রিল।

বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীর জেরার জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম এ কথা বলেন।

আদালত সূত্র জানায়, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় আসামিপক্ষের আইনজীবী মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় দিনের জেরা শুরু করেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পর বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে আবারও তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করার কথা রয়েছে।

জেরা চলাকালে আসামিপক্ষের এক আইনজীবী তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলমের কাছে জানতে চান- মামলার এজাহার কপিতে চার নাম্বার সাক্ষীর নাম নাসরিন সুলতানা নিশাত, বাবার নাম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী লিখা হয়েছে। কিন্তু মামলার অভিযোগপত্রে সাক্ষীর এ নাম আছে কিনা? জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন সাক্ষীর নাম ঠিক আছে। তবে হুবহু নেই। আইনজীবীর প্রশ্ন ছিল মাদ্রাসার ছাদে নুসরাতে গায়ে আগুন দেওয়ার সময় বোরকা পরা ব্যক্তিদের হাতমোজা ও চোখে চশমা ছিল। সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে কিনা। তদন্ত কর্মকর্তা না সূচক জবাব দেন।

আইনজীবীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, মাদ্রাসার ছাদে নুসরাতের গায়ে আগুন লাগানোর ঘটনায় সোনাগাজী থানা কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি করার মাধ্যমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেন। তবে, মাদ্রাসার পক্ষ থেকে এ ঘটনায় থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করা হয়নি।

এ নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এজাহার গ্রহণকারী সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে- তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাকে পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তকালে দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের অবহেলা ছিল না। এছাড়া আসামিপক্ষের আইনজীবী মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তদন্ত কর্মকর্তা তাঁদের প্রশ্নের জবাব দেন। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় ৯২জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক মো. শাহ আলমের সাক্ষ্য দেওয়া শেষে জেরা চলছে।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের (সাইক্লোন শেল্টার) ছাদে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর দিয়াশলাই দিয়ে আগুন লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। অগ্নিদদ্ধ ১০ এপ্রিল ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।