মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
তবে তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপনের উপর কোনো অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেননি হাইকোর্ট।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ২০০৯ সালের রেগুলেশন ৪১ (২)(খ)(৪) অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির। কিন্তু এখানে অধ্যক্ষর বিষয়টি বলা নেই। শুধু শিক্ষক-কর্মচারীর কথা রয়েছে।
এর আগে সোমবার এ বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানি শেষে মঙ্গলবার অন্তত বেলা ১১টা পর্যন্ত যেন অধ্যক্ষ যোগদান করতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্তকে নিশ্চিত করতে বলেছিলেন আদালত।
আদালতে আবেদনটি দায়ের করেন ভিকারুননিসার গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ।
আবেদনের পর তিনি বলেছিলেন, ১৯৭৯ সালের রেগুলেশন ২(এ)(ই), ৩(১) (২) অনুযায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির এবং ২০০৯ সালের রেগুলেশন ৪১ (২)(খ)(৪) অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির। কিন্তু সরকার অবৈধ ক্ষমতা ব্যবহার করে মাউশির একজন কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়।
২০১৯ সালে করা এক রিট আবেদনের অংশ হিসেবে সম্পূরক আবেদন করা হয়।
এর আগে, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ফাওজিয়াকে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের এই নিয়োগ আদেশে বলা হয়েছে, তিনি নিজ বেতনক্রম অনুযায়ী বেতন-ভাতা গ্রহণ করবেন এবং পদ সংশ্লিষ্ট ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়ার নজির বেশ কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ প্রতিষ্ঠানটিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়েই চলছিল প্রায় ১০ বছর। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্য ধরে রাখতেই বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, প্রতিষ্ঠান বিনা ভাড়ায় বাসস্থানের ব্যবস্থা করলে তিনি কোনো বাড়ি ভাড়া, ভাতা পাবেন না। সরকারি বাসায় বসবাস করলে বাড়ি ভাড়াসহ যাবতীয় সরকারি পাওনা নিজ দায়িত্বে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট খাতে জমা দেবেন।
তিনি স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বাধ্যতামূলক ভবিষ্যৎ তহবিল, গোষ্ঠী বিমা ও অন্যান্য তহবিলে চাঁদা দেবেন। প্রতিষ্ঠান থেকে সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী তার লিভ সেলারি ও পেনশনের চাঁদা দেবেন।
সরকারের প্রচলিত বিধি-বিধান ও আদেশ অনুসারে তার চাকরি নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে আসছিলেন সহকারী অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম। দীর্ঘদিন থেকে প্রতিষ্ঠানটি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছিল। ফলে ভর্তি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য ছিল নামি ও ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
অধ্যক্ষ নিয়োগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল ভিকারুননিসা। এতে নিয়োগ প্রত্যাশী ১৬ প্রার্থীর আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছয়জন ও বাইরে থেকে ১০ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞার কারণে আর অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে পারেনি ভিকারুননিসা। এসব ঘটনার মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হলো।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯/আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা
ইএস/জেডএস