ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

শিশু জাইমার চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
শিশু জাইমার চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

ঢাকা: এমভি ইয়াদ লঞ্চের ধাক্কায় পায়ের পাতা কাটা পড়া আট বছর বয়সী শিশু জাইমা নেওয়াজের চিকিৎসাসহ তার পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার চিকিৎসার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা দিতে লঞ্চ মালিক ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং শিশুটির বাবার করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৭ অক্টোবর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুরের রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার আনিসুল হাসান ও শাহীনুজ্জামান শাহীন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

আদালতের আদেশের বিষয়টি জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় বলেন, আদালত রুল জারি করে চিকিৎসার জন্য শিশু জাইমার পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা দিতে সাত থেকে ১২ নম্বর বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

আনিসুল হাসান বলেন, ঘটনার সময় ওই শিশু বয়স ছিলো ৬ বছর।

রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন- নৌপরিবহন সচিব, বাংলাদেশ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান, নৌ অধিদফতরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, লঞ্চের মালিক মামুন অর রশিদ, প্রথম শ্রেণীর মাস্টার আব্দুর রউফ, দ্বিতীয় শ্রেণীর মাস্টার নাসির উদ্দিন গাজী, দ্বিতীয় শ্রেণীর চালক মো.স্বপন, তৃতীয় শ্রেণীর চালক মো.ফারুক হোসেন ও ম্যানেজার মনিরুজ্জামান।

‘পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় পা হারানো শিশু জাইমার পরিবার’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করেন।

২০১৮ সালের ২২ মার্চ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এমভি ইয়াদ লঞ্চের মালিক মামুন অর রশিদ ও তার লোকজনের জীবন নাশের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় আহত শিশু জাইমা নেওয়াজ জিসার পরিবার। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য লঞ্চ মালিক শিশুর বাবা জামাল গাজীকে জীবন নাশ, বাচ্চা অপহরণ ও এসিড ছুড়ে সপরিবারে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় শিশু জাইমার মা নাজমুন নাহার বাদী হয়ে সোমবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সরোয়ার হোসেনের আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, গত বছর (২০১৭ সালের) ২৯ ডিসেম্বর ছয় বছরের  শিশু কন্যা জাইমা নেওয়াজ জিসা, বাবা জামাল গাজী, মা নাজমুন নাহার ও ছেলে খাঁজা গরীবে নেওয়াজকে নিয়ে ঢাকা থেকে আমতলীতে আসার উদ্দেশ্যে ফতুল্লা লঞ্চঘাটে আসেন। এমভি ইয়াদ লঞ্চটি ফতুল্লা ঘাটে এসে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে শিশু জাইমা ছিটকে গিয়ে লঞ্চ ও লঞ্চঘাটের মাঝখানে ডান পা আটকে যায়। শিশু জাইমার ওই পায়ের পাতার সম্মুখভাগ বিছিন্ন হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক শিশু জাইমাকে উদ্ধার করে ঢাকা জেনারেল অ্যান্ড অর্থোপেটিক্স হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে সে। এ ঘটনায় শিশু জাইমার বাবা জামাল গাজী বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লঞ্চ মালিক মামুন অর রশিদসহ ৬ জনকে আসামি করে দক্ষিণ কোরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়ের পর থেকে শিশুর বাবা জামাল গাজীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য লঞ্চ মালিক ও তার লোকজন জীবন নাশের হুমকি, বাচ্চা অপহরণ ও এসিড ছুড়ে সপরিবার মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন শিশুর পরিবার। এ ঘটনায় সোমবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সরোয়ার হোসেনের আদালতে শিশুর মা নাজমুন নাহার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
ইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।