ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

২১ বছর পর মাদারীপুরে ধর্ষণ মামলার রায়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
২১ বছর পর মাদারীপুরে ধর্ষণ মামলার রায়

মাদারীপুর: ২১ বছর পর মাদারীপুরে একটি ধর্ষণ মামলার রায় হয়েছে। ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণ মামলায় শামসুল হক নামে এক ব্যক্তিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ রায় দেন। মামলার অপর দুই আসামির দোষ না পাওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত শামসুল হক পলাতক রয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ কানাইপুর গ্রামের প্রভাবশালী শামসুল হকের নজর পড়ে একই এলাকার দরিদ্র পরিবারের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর ওপর। তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করতে ব্যর্থ হয়ে প্রলোভন দেখিয়ে একটি নীল কাগজে ভুয়া বিয়ের কাবিননামা দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন ওই ব্যক্তি। এতে ওই ১৫ বছর বয়সী কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়েন। পরে স্বামী ও সন্তানের স্বীকৃতি চাইলে অস্বীকার জানান শামসুল হক। স্বামী ও সন্তানের স্বীকৃতির জন্য বিচারের আশায় ১৯৯৯ সালের ২৮ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ভুক্তভোগী পরিবারটি অসহায় হওয়ায় মামলা পরিচালনার দায়িত্ব নেয় মাদারীপুর লিগ্যাল এইড অ্যাসোসিয়েশন। এক পর্যায়ে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতেও রিট করে এবং বিভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি দীর্ঘসূত্রিতার চেষ্টা করে।

২০১৭ সালে আদালত ডিএনএ টেস্টের জন্য নির্দেশনা দেন। কিন্তু আসামি শামসুল হক এখন পর্যন্তও ডিএনএ টেস্ট করেননি। প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে ও শারীরিক সম্পর্কে জন্ম নেওয়া ওই নারীর ছেলের বয়স বর্তমানে ১৯ বছর ৬ মাস।

পরে আদালত ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে শামসুল হকের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। একই সঙ্গে অপর দুই আসামির দোষ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

মাদারীপুর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং বাংলানিউজকে জানান, রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। দ্রুত রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আসামিকে গ্রেফতারসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

লিগ্যাল এইড অ্যাসোসিয়েশনের বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল হাসান জানান, ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মামলায় স্ত্রী হিসেবে ও জন্ম নেওয়া সন্তানের স্বীকৃতি এবং ভরণপোষণ বাবদ ক্ষতিপূরণ এবং আসামির বিচার দাবি করা হয়। রায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা দেন আদালত। জরিমানার অর্ধেক পাবে মামলার বাদী ও বাকি অর্ধেক টাকা ক্ষতিগ্রস্ত কিশোরীকে দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।