ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জামিন নামঞ্জুর, রুহুল আমিন গাজী কারাগারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
জামিন নামঞ্জুর, রুহুল আমিন গাজী কারাগারে

ঢাকা: সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তার পক্ষে করা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পরোয়ানা মূলে রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

আসামিপক্ষে আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজী এই মামলায় জামিনে ছিলেন। জামিন থাকার পরও কীভাবে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তা বোধগম্য নয়। মামলার অভিযোগটি রাষ্ট্রদ্রোহ হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। আসামি অসুস্থ। এ অবস্থায় জামিনের প্রার্থনা করছি।

অপরদিকে সিএমএম আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আইনজীবী আজাদ রহমান জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই আদালত তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা দিয়েছিলেন। আমরা তার জামিনের বিরোধিতা করছি।  

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পরে আইনজীবী আজাদ রহমান জানান, কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ বলে সংবাদ প্রকাশ করায় ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আফজাল হোসেন হাতিরঝিল থানায় সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি মূলে আদালত অভিযোগটি তদন্তের অনুমতি দেন।

এরপর অভিযোগটি রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। প্রতিবেদনে দণ্ডবিধির ১২৪(ক) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধের সত্যতা পায় বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা মূলেই রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করা হয়।  

এর আগে বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে হাতিরঝিল থানা পুলিশ মগবাজার সংগ্রাম অফিস থেকে রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করে। রুহুল আমিন গাজী দৈনিক সংগ্রামের প্রধান প্রতিবেদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ অভিহিত করে প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য একই বাদীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদ ১০ মাসের বেশি কারাবন্দি। তিনি হাইকোর্ট থেকে গত মাসে এক বছরের অন্তর্বর্তী জামিন দিলেও আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত তা স্থগিত করে। সেই মামলায় রুহুল আমিন গাজীও আসামি। তবে তিনি ওই মামলায় জামিনে আছেন।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ফাঁসি কার্যকর করা হয় কাদের মোল্লার। সেই দিনের স্মরণে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর জামায়াতের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত দৈনিক সংগ্রামের প্রথম পাতায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার শিরোনাম ছিল ‘শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার ৬ষ্ঠ শাহাদত বার্ষিকী আজ’।

এর প্রতিবাদে পরের দিন ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সংগ্রাম পত্রিকার কয়েকটি কপি পোড়ান ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। বিকেলে দৈনিক সংগ্রামের কার্যালয় ঘেরাও ও ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধরা।

দৈনিক সংগ্রামের কার্যালয়টি জামায়াত-শিবিরের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অভিযোগ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পত্রিকাটির ‘ডিক্লারেশন’ বাতিলের দাবি জানানো হয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
কেআই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।