ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলায় সদ্যপ্রয়াত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুর বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) কেরানীগঞ্জ কারাগারের ২ নম্বর ভবনে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান এই আদেশ দেন।
এদিন মামলাটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতেই তার পক্ষে অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদন শুনানির দিন ধার্য ছিল। এর আগেই গত ১৬ মার্চ মামলার আরেক আসামি মওদুদ আহমদ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাই এদিন তার আইনজীবীরা মওদুদ আহমদের মৃত্যুর বিষয়টি আদালতকে অবহিত করে তার পক্ষে অব্যাহতির আবেদন করেন।
আদালত মওদুদ আহমদের মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল ও অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ২৫ মার্চ দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ এই তথ্য জানান।
গত ২ মার্চ এই মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারায় আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দাখিলের আবেদন করেন মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। তাই তাকে আপাতত স্বশরীরে আদালতে যেতে হচ্ছে না।
এরপর ওইদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। তবে এদিন শুনানি শেষ না হওয়ায় আগামী ১৮ মার্চ পরবর্তী দিন ধার্য করেছিলেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এর মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়। সেখান থেকে পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে তিনি গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২১
কেআই/এমজেএফ