ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

প্রতিমাসে ৫ হতদরিদ্রকে খাওয়ানোর শর্তে মিললো মুক্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট    | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
প্রতিমাসে ৫ হতদরিদ্রকে খাওয়ানোর শর্তে মিললো মুক্তি

যশোর: যশোরে মাদক মামলার আসামি আলমগীর হোসেনকে প্রতিমাসে পাঁচ হতদরিদ্রকে খাওয়ানোসহ নয় শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।  

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস এই আদেশ দেন।

আসামি আলমগীর হোসেন শার্শা উপজেলার রাড়িপুকুর গ্রামের মৃত রজব আলী গাজীর ছেলে।  

শর্তগুলো হলো- সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোনো প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না, শান্তি বজায় রেখে সবার সঙ্গে সদাচারণ করতে হবে, আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যেকোনো সময় তলব করলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে, কোনো প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সঙ্গে চলাফেরা বা মেলামেশা করা যাবে না, একই সঙ্গে আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে সার্বিক অবস্থা জানাতে হবে, এই প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না, প্রবেশনকালীন মহান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখতে হবে। সেগুলো হলো- একাত্তরের যীশু, নদীর নাম মধুমতি, হুলিয়া, প্রত্যাবর্তন, পতাকা, আগামী, একজন মুক্তিযোদ্ধা, ধুসর, আমরা তোমাদের ভুলবোনা, শরৎ একাত্তর, প্রবেশনকালীন ১০টি বৃক্ষরোপন করতে হবে এবং প্রতিমাসে কমপক্ষে পাঁচজন হতদরিদ্রকে দুপুরের আহার করাতে হবে।  

রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর অভিযুক্তের হাজিরার কোনো ত্রুটি নেই। তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলাও নেই। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

জেলা যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের এপিপি লতিফা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের জানান, মামলায় আটকের পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে আলমগীর হাজিরা কামাই দেননি। এ মামলা ছাড়া তার আর কোনো মামলাও নেই। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আসামিদের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশনে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত।  

তিনি আরও বলেন, গত একসপ্তাহে আরও চারটি মামলায় ব্যতিক্রমী এমন রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী ফরিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস যশোরে যোগদানের পর থেকে আসামি পুনর্বাসনের জন্য একের পর এক ব্যতিক্রমী রায় ঘোষণা করে যাচ্ছেন। আসামিদের পুনর্বাসনের জন্য এ ধরনের রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে তিনি জানান।  

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে ১৯ জুন রাতে যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া থেকে নয় বোতল ফেনসিডিলসহ আলমগীরকে আটক করে চাঁচড়া ফাড়ি পুলিশ।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
ইউজি/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।