ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

কুষ্টিয়ায় শিশু হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২১
কুষ্টিয়ায় শিশু হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড আসামি সবুজ মল্লিক ইনসেটে শিশু দেব দত্ত

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার মিরপুরে আলোচিত শিশু দেব দত্তকে (৮) অপহরণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি সবুজ মল্লিককে (২৩) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলার অপর দুই আসামির মধ্যে একজনকে ১৪ বছর ও অপরজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

রোববার (০৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সবুজ মল্লিকের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সবুজ মল্লিক মিরপুর উপজেলার ১ নম্বর চিথলিয়া ইউনিয়নের চিথলিয়া এলাকার তুফান মল্লিকের ছেলে।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামিরা হলেন- মিরপুর উপজেলার ১ নম্বর চিথলিয়া ইউনিয়নের চিথলিয়া এলাকার আমান আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান (৩৩) ও একই এলাকার মৃত আনছার আলীর ছেলে এরশাদ আলী (২২)। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।

এছাড়াও এ মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি আক্কাস আলীর ছেলে জোয়ার (২৫) ও জহুরুল ইসলামের ছেলে নাঈম (২২) দুজনেই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ০৯ জুন সকাল সাড়ে ৭টায় স্কুলছাত্র দেব দত্ত বাড়ি থেকে বের হয়ে মিরপুর উপজেলার চিথলিয়ায় মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে তালিম মাস্টারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। পরে দেব বাড়িতে ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে প্রতিবেশীর মাধ্যমে জানতে পারে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি দেবকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে গেছে। অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ঘটনার পরের দিন দেবের বাবা পবিত্র কুমার দত্ত অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মিরপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) আব্দুল হালিম ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে পাঁচজনকে আটক করে। ২০১৮ সালের ২৬ জুন আটক দুই আসামি নাঈম (২২) ও জোয়ার আলী (২৫) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। তারা দুজনই দেব অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামি এবং তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নাঈমের বাড়ির শৌচাগারের পাশে গর্ত খুড়ে দেবের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারী কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম জানান, মামলার সাক্ষী ও আসামিদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার প্রধান আসামি সবুজকে ফাঁসির আদেশ, হাবিবুর রহমানকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অপর আসামি এরশাদ আলীকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিকে রায় ঘোষণার পরে মামলার বাদী শিশু দেব দত্তের পবিত্র কুমার দত্ত রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।