ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

এবার আলোচিত মামলাগুলোর শুনানি হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২২
এবার আলোচিত মামলাগুলোর শুনানি হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

ঢাকা:‘আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগের পর আশা করি  অচিরেই দুটি বেঞ্চ হবে, তখন মানবতাবিরোধী অপরাধ,বিডিআর হত্যা মামলাসহ আলোচিত মামলা উপস্থাপনের পর শুনানি হবে’ বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পর আলোচিত এসব মামলাগুলো শুনানির জন্য ওঠেনি।

করোনার এই সময়ে ভার্চ্যুয়ালি মৃত্যুদণ্ডের মামলার বেশি শুনানি হয়েছে। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের দেওয়া তথ্য মতে,হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কনফার্মের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ১২৫টি আপিল নিষ্পত্তি হয়েছে।  

আপিল বিভাগে সদ্য চার বিচারপতি নিয়োগের পর আলোচিত মামলার শুনানির বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, আশা করি অচিরেই দুটি বেঞ্চ হবে। যখন দুটি বেঞ্চ হবে তখন আমরা এ মামলাগুলো দ্রুত শুনানি করতে পারবো। আমরা যুদ্ধাপরাধের মামলা গুলো মেনশন করবো। বিডিআর হত্যাসহ সব মামলা মেনশন করবো। বিডিআর মামলাটা হাইকোর্টে দীর্ঘদিন ধরে শুনানি হয়েছে। এটার সঙ্গে অনেকজন সম্পৃক্ত। এতো আপিলকারীর আপিল তো দীর্ঘদিন ধরে শুনতে হবে। বেশ সময় লাগবে। একারণে একটা কোর্টকে অ্যাসাইন(নির্ধারণ) করে দিতে হবে। আশা করা যায় এখন শুনানি হবে।  

বর্তমানে আপিল বিভাগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলার রিভিউ শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। রয়েছে প্রায় ২৫ এর অধিক আপিল শুনানির অপেক্ষায়।

দুটি রিভিউ হলো-এটিএম আজহার ও সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারে রিভিউ।

আজহার 

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। । ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। পরে ওই রায় রিভিউ চেয়ে আবেদন করেন এটিএম আজহার।

কায়সার

২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনকারী হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে সর্বোচ্চ সাজাসহ ২২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

আপিলের পর ২০২০ সালে ১৪ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সৈয়দ কায়সারের ৩টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরে মৃত্যুদণ্ডের রায় পুর্নবিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেন মানবতাবিরোধী অপরাধী জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার ।

বিডিআর হত্যাযজ্ঞ

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা। সেই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান।

এ ঘটনায় করা দুটি মামলার মধ্যে হত্যাযজ্ঞের মামলার বিচার কাজ হাইকোর্ট বিভাগে সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা এখনো নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

হত্যাযজ্ঞের মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেন বিচারিক আদালত।

এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ১৬০ জনের। ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ২৫৬ জনের। খালাস পান ২৭৮ জন।

নিয়ম অনুসরে ডেথ রেফারেন্স আসে হাইকোর্টে। আপিল করেন আসামিরা। কয়েকজন খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষও।

হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর রায় দেন দেওয়া হয়। রায়ে ফাঁসি বহাল হয় ১৩৯ জনের। যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া ১৮৫ জনকে। ২২৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ৪৫ জন।

ইতিমধ্যে দণ্ডিত আসামিদের পক্ষে আবেদন করা হয়েছে। হাইকোর্টে খালাস পাওয়া এবং দণ্ড কমে যাওয়া ৮৩ জনের বিষয়েও আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

বাংলাদেশ সময় ১০৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২২
ইএস/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।