ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

১৭ বছরেও শেষ হয়নি কিবরিয়া হত্যা মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
১৭ বছরেও শেষ হয়নি কিবরিয়া হত্যা মামলা শাহ এএমএস কিবরিয়া

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজার ট্র্যাজেডির ১৭ বছর আজ বৃহস্পতিবার। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি ভয়ানক গ্রেনেড হামলায় নিহত হয়েছিলেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া।

তাঁর ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদাসহ ওই হামলায় প্রাণ হারান আরও চারজন।

নানা জটিলতায় দীর্ঘ ১৫ বছরেও এ মামলার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে নিহতদের পরিবারসহ জেলাবাসীর মধ্যে।

শাহ এএমএস কিবরিয়ার ১৭তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় রাজধানীর বনানীতে কবর জিয়ারত ও মানববন্ধের আয়োজন করা হয়েছে।  

এ সময় কিবরিয়া পরিবার ও গণ অধিকার পরিষদের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া কিবরিয়া স্মৃতি সংসদ সদসসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ, শোক র‌্যালি, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার  বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী আওয়ামী লীগের এক জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া।  

চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওই হামলায় তাঁর ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন ৭০ জন। ঘটনার পরদিন হত্যা মামলা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। পরে মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তাস্তর করা হয়।  

পরে ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ প্রথম দফায় শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেন মামলার বাদী বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মজিদ খান। ২০০৭ সালে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য আবারও সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।  

এরপর ২০১১ সালের ২০ জুন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নানসহ ২৪ জনকে আসামি করে অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই বছরের ২৮ জুন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া এই অভিযোগপত্রের ওপরও নারাজি আবেদন করেন।  

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর সিআইডি সিলেট রেঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেরুন নেছা পারুল সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গউছসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।  

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মিজানুর রহমান মিটু, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ প্রকাশ নিমু, বদরুল আলম মিজান, মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ, আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, মুহিবুল্লাহ ওরফে মুজিবুর রহমান প্রকাশ অভি ও মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম।  

এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গউছসহ ১২ জন জামিনে রয়েছেন। মামলায় ১৭ বছরে ১৭১ সাক্ষীর মধ্যে ৪৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।  

এ বিষয়ে গত বছর সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া বাংলানিউজকে বলেন, মামলার বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আমরা একেবারেই আশা রাখছি না। এ ধরনের একটা মামলা ইফেক্টিভ তদন্ত ছাড়া ভুল তদন্তে বিচার আশা করা যায় না। তদন্তকারী কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।  
মামলায় অধিক সাক্ষী দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মামলাটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে কিছু আজেবাজে লোককে জড়িত করেছে। একটি হত্যা মামলা তারা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে, এটাই আমার কাছে আপত্তিকর।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।