ঢাকা: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির আদালত গঠিত বোর্ডে শেয়ার কিনে পরিচালনায় যুক্ত হতে চেয়েছেন মো. রাসেলের শ্বশুর-শাশুড়িসহ তিনজন।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টে রাসেলের শাশুড়ি ফরিদা তালুকদার, শ্বশুর রফিকুল আলম তালুকদার ও ইভ্যালির সাবেক নির্বাহী পরিচালক এহসান সরওয়ার চৌধুরী কারাবন্দি ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের নামে থাকা শেয়ার থেকে কিছু শেয়ার কেনার ব্যাপারে এ অভিব্যক্তি জানান।
এরপর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ তাদেরকে এ বিষয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে হলফনামা দিতে বলেছেন।
আদালতে বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোরশেদ আহমেদ খান। রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি আদালতের গঠিত বোর্ডের এক আবেদনে মো. রাসেল ও তার স্ত্রী, ভাই-বোন, বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি ও কন্যার ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কেন জব্দ করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। তাদেরকে এ শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ১০ ফেব্রুয়ারি কিছু গাড়ি নিলামের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ডেপুটি রেজিস্ট্রারের সঙ্গে থাকবেন একজন সহকারী রেজিস্ট্রার । ডিএমপি কমিশনার এবং র্যাবের ডিজিকে নিলামের স্থানে নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ইভ্যালির লিগ্যাল টিমের কো-অর্ডিনেটর দাবি করে ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোডকারী নিঝুম মজুমদারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে হাজির হতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর দিন নিঝুম মজমুদার আদালতে হাজির হন। আর আজকে তারপক্ষে তার বাবা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গোলাম সারওয়ার মজুমদার লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন। পরে আদালত তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।
এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানিয়েছিলেন, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন।
অর্ডারের সময় তিনি মোবাইলফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। আবেদনকারী যোগাযোগ করার পর তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু পণ্যটি দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি ইভ্যালি। যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি আবেদনকারী। তাই তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। আবেদনে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়েছে।
তার আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আবেদনটি অ্যাডমিট করেন। এছাড়া আদেশে ইভ্যালির যত সম্পদ রয়েছে, সেটা যেন বিক্রি অথবা হস্তান্তর না করা যায়। আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করেন, কেন ইভ্যালিকে অবসায়ন করা হবে না।
আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে।
এরপর ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে (চেয়ারম্যান) বোর্ড গঠন করেন হাইকোর্ট।
বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ ও আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। আর সরকারি বেতনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
ইএস/এএটি