ঢাকা: আইনজীবীদের পড়াশোনা ও নৈতিকতার ওপর জোর দিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আইনজীবী হওয়ার শর্টকাট কোনো মেথড নেই। পড়াশোনা করতে হবে, পড়াশোনা করতে হবে এবং পড়াশোনা করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত ১৫ দিনব্যাপী ‘বইমেলা-২০২২’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, যখন কোরআন শরীফ নাজিল হয়। আল্লাহর বাণী, জিব্রাইলের মাধ্যমে আমাদের নবীজীর ওপর। প্রথম কথা যেটা ছিল সেটা হচ্ছে পড়, পড়, পড়। তিনবার পড় বলার পর রাসুল সা. বললেন- আমি তো পড়তে জানি না। তখন জিব্রাইল আ. তাকে চেপে ধরেন। যাই হোক পড় শব্দটা মানে কী। কিছু জানতে গেলে পড়তে হবে। আপতদৃষ্টিতে মনে হয় আমরা অনেক কিছু পড়ে ফেলেছি। আসলে কিছুই পড়িনি। যখন পড়তে থাকি তখন মনে হয় কত অজানা।
আইনজীবীদের পড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভালো আইনজীবী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই পড়াশোনা ছাড়া। পড়তে হবে এবং পড়তে হবে।
মামলার যুক্তিতর্কের সময় শতভাগ সৎ থাকার তাগিদ দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, শুধু মক্কেলের দিকে তাকিয়ে কোর্টকে মিসলিড করে কোনো অর্ডার নেওয়া নৈতিক না। কোনোভাবেই নৈতিক নয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, মক্কেলের দুর্বলতার সুযোগে বেশি অর্থ নেওয়া নৈতিকতার বিষয়। অনেক আইনজীবী আছেন যারা পয়সার লোভ করেন না। আমাদের পাল বাবু ছিলেন ২০ হাজার ১ টাকা ফি নিতেন। মাহমুদুল ইসলাম সাহেবও। একবার মাহমুদুল ইসলামকে সিনিয়র হিসেবে একটি মামলায় যুক্ত করি এবং ফিসও দিয়েছি। উনি আপিল বিভাগে যাওয়ার আগেই মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেল। আমরা জিতে গেলাম। আমি কোর্ট থেকে বেরিয়ে দেখি স্যার আসতেছেন। আমি থামিয়ে বললাম মামলার শুনানি শেষ, আমরা জিতে গেলাম। তখন তিনি মক্কেলকে দেখা করতে বললেন। মক্কেল দেখা করার পর তিনি পুরো টাকা ফেরত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন-মামলায় হাজির হতে পারেননি তাই ফেরত দিয়েছেন। এটা কিন্তু নৈতিকতা বা নীতির মাপকাঠি। এ রকম আইনজীবী ছিলেন। আপনাদের মধ্যে এ রকম অনেককে চিনি।
আইনজীবী হওয়ার শর্টকাট কোনো মেথড নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, পড়াশোনা করতে হবে, পড়াশোনা করতে হবে এবং পড়াশোনা করতে হবে। সেজন্য আপনাদের নামের আগে বিজ্ঞ বসে। অন্যদের তা বলা হয় না। কিন্তু আইনজীবীদের বিজ্ঞ বলা হয়। এ বিজ্ঞতা অর্জন করতে হলে আমাদের পড়তে হবে।
সমিতি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সম্পাদক মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং আইনজীবী সমিতির কার্যকরী নেতাসহ আইনজীবীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
ইএস/আরবি