ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রাসেল-শামীমার ইভ্যালির শেয়ার নিতে পারবেন শ্বশুর-শাশুড়ি 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২
রাসেল-শামীমার ইভ্যালির শেয়ার নিতে পারবেন শ্বশুর-শাশুড়ি 

ঢাকা: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের শেয়ার কিনতে পারবেন শ্বশুর-শাশুড়িসহ তিনজন। সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তর বা স্থানান্তর করতে পারবেন।

কারাবান্দী রাসেল-শামীমার শেয়ার হস্তান্তরে কারামহাপরিদর্শককে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

রাসেলের শাশুড়ি ফরিদা তালুকদার, শ্বশুর রফিকুল আলম তালুকদার ও ভায়রা মো. মামুনুর রশিদের আবেদনে বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার আদেশ পরিমার্জন করে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার এ আদেশ দেন।

আদেশে ধানমন্ডির ১৪ নম্বর সড়কে ইভ্যালি কার্যালয়ের ভবন ‘উইন কোর্ট’র মালিক শেখ সালাউদ্দিনকে ২৪ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ১০টায় হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নির্দেশ মতো হাজির না হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

আদেশ বলা হয়েছে, রাসেল-শামীমা তাদের শেয়ার হস্তান্তর বা স্থানান্তর করলে রফিকুল আলম তালুকদার, ফরিদা তালুকদার বা মো. মামুনুর রশিদ সেই শেয়ার অন্য কারও কাছে বিক্রি, হস্তান্তর বা স্থানান্তর করতে পারবেন না। এছাড়া আইন এবং দলিল অনুযায়ী তারা তাদের সমস্ত কার্যক্রমের জন্য আদালতের গঠন করে দেওয়া পরিচালনা বোর্ডের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন এবং জবাবদিহি করবেন। এ সংক্রান্ত সবকিছুর জন্য তাদের পরিচালনা বোর্ডের নিয়োগ করা নিরীক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি নীরিক্ষা কাজে নিরীক্ষককে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে ইভ্যালির সাবেক নির্বাহী পরিচালক এহসান সারওয়ার চৌধুরীকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করীম, শামীম আহমেদ মেহেদী। বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোরশেদ আহমেদ খান। যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম মাসুম।

এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।  

ওই গ্রাহক ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে একই বছরের মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন।

অর্ডারের সময় তিনি মোবাইল ফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি।  

আবেদনকারী যোগাযোগ করার পর তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু পণ্যটি দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি ইভ্যালি। যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি আবেদনকারী। তাই তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। আবেদনে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়েছে।

তার আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আবেদনটি অ্যাডমিট করেন। এছাড়া আদেশে ইভ্যালির যত সম্পদ রয়েছে, সেটা যেন বিক্রি অথবা হস্তান্তর না করা যায়। আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করেন, কেন ইভ্যালিকে অবসায়ন করা হবে না।

আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে।

এরপর ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে (চেয়ারম্যান) বোর্ড গঠন করেন হাইকোর্ট।

বোর্ডের সদস্য করা হয়- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ ও আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। আর সরকারি বেতনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২
ইএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।