ঢাকা: পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই আসামি কবির হোসেন ও আরমান ওরফে মনিরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে কবিরকে সাত বছর কারাদণ্ড ও আরমানকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ওমর ফারুক মানিক, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ, শাহজালাল মিয়া, চান মিয়া, রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব, আবু সাঈদ রাসেল ওরফে সোলায়মান ওরফে সালমান ওরফে সায়মন ও রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব ওরফে সুমন।
গত ১ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এরপর ওইদিনই রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন আদালত।
২০১৭ সালের ৩১ মে ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। চার্জগঠনের পর ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী মো. জালাল উদ্দিন। এ অবস্থায় ২০১৮ সালের ১৪ মে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি হয়।
এরপর চার্জশিটভুক্ত ১০ আসামির মধ্যে জাহিদ হাসান শিশু বলে দাবি করেন তার আইনজীবী। তার জন্মসনদ, পরীক্ষার সনদ জমা দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনালে। আদালত সব কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওই আসামিকে শিশু হিসেবে সিদ্ধান্ত দেন।
আইন অনুযায়ী, ওই আসামিকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে সম্পূরক চার্জশিট দিতে বলেন ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত কর্মকর্তা সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর মাসুদ রানা নামে আরেক আসামিকে শিশু দাবি করেন তার আইনজীবী। পরে মাসুদ রানাকেও শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে আরেকটি সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ দুজনের মামলা বর্তমানে শিশু আদালতে বিচারাধীন।
আসামিদের মধ্যে আরমান, রুবেল ও কবির আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটিতে ৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে হোসেনি দালান এলাকায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।
এ ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি চকবাজার থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে এর তদন্তভার ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে ডিবি দক্ষিণের পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিউদ্দিন শেখ ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ১০ জঙ্গিকে আসামি করে চার্জশিট অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ওই বছরের অক্টোবরে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২২, আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা
কেআই/আরবি